দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিশ্বে শরণার্থীর সংখ্যা এখন সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে বিশ্বে শরণার্থী সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় এক শতাংশ।
২০১৯ সালের শেষে শরণার্থীর মোট সংখ্যা ছিলো ৭ কোটি ৯৫ লাখ। বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রকাশিত বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এইসব তথ্য দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বে মোট শরণার্থী সংখ্যা ছিলো ৭ কোটি ৮ লাখ। সেই হিসেবে এক বছরেই শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৭ লাখ। ইউএনএইচসিআর-এর ঢাকা কার্যালয় হতে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
বার্ষিক ‘গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্ট’ শিরোনামে ইউএনএইচসিআর-এর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের শেষে সারাবিশ্বে ৭ কোটি ৯৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছেন। ইতিহাসে ইতিপূর্বে এতো মানুষ কখনও গৃহহারা হননি। একই সঙ্গে বিশ্বে শরণার্থী সংকটের বর্তমান চিত্র বলে দিচ্ছে যে শরণার্থীদের দুর্দশার দ্রুত সমাপ্তির আশাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। ৯০-এর দশকে প্রতি বছর গড়ে ১৫ লাখ মানুষ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরতে পারেন। চলতি দশকে এইসংখ্যা কমে ৩ লাখ ৯০ হাজারে পৌঁছে গেছে। এটি প্রমাণ করছে শরণার্থী সংকটের স্থায়ী সমাধান ক্রমশই আরও জটিলতর হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে শরণার্থী সংকটের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরে বলা হয় যে, ৭ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের মধ্যে ৪ কোটি ৫৭ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন নিজ দেশের ভেতরেই। অপরদিকে বাকিরা বাধ্য হয়েছেন দেশ ছাড়তে, যার মধ্যে ২ কোটি ৯৬ লাখ শরণার্থী ও ৪২ লাখ মানুষ অন্য কোনো দেশে আশ্রয়ের আবেদন করে রয়েছেন ফলাফলের অপেক্ষায়।
এতে আরও বলা হয় যে, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক এবং মঙ্গোলিয়ার মোট জনসংখ্যার যোগফলের চেয়েও বেশি সংখ্যক শিশু বর্তমানে বাস্তুচ্যুত। তাদের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি হতে ৩ কোটি ৪০ লাখ, যার মধ্যে লাখ লাখ শিশুই আবার অভিভাবকহীন। তাছাড়াও বলপূর্বক বাস্তুচ্যুতির পরিমাণ গত ১০ বছরে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ (২০১০ সালে ছিল ৪ কোটি ১০ লাখের মতো, যা বর্তমানে ৭ কোটি ৯৫ লাখ)। ৮০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত মানুষ এমন এমন দেশে রয়েছেন, যেসব দেশ তীব্র খাদ্য সংকট এবং অপুষ্টি সমস্যায় জর্জরিত একটি দেশ। এর মধ্যে অনেক দেশ জলবায়ু এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতেও রয়েছে। বিশ্বের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি শরণার্থী (৭৭ শতাংশ) দীর্ঘমেয়াদী সংকটে আটকে রয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- আফগানিস্তান সংকটের বর্তমানে পঞ্চম দশক চলছে। প্রতি ১০ জনে গড়ে ৮ জনেরও বেশি (যা ৮৫ শতাংশ) শরণার্থী বর্তমানে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশে। সাধারণত প্রতিবেশী দেশেই তারা আশ্রয় নিয়ে থাকেন।
ওই প্রতিবেদনে ক্রমান্বয়ে শরণার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার জন্য দু’টি প্রধান কারণের কথা তুলে ধরা হয়। প্রথমটি হলো, নতুন বাস্তুচ্যুতির বিভিন্ন ধরনের ঘটনা- বিশেষত গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল, ইয়েমেন এবং সিরিয়ার যুদ্ধ সংঘাত। সংঘাতপূর্ণ আফ্রিকায় গত ৯ বছরে ১ কোটি ৩২ লাখ হয়েছে শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী কিংবা আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতও হয়েছেন। এই সংখ্যা হলো বৈশ্বিক বাস্তুচ্যুতির ৬ ভাগের ১ ভাগ।
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে রয়েছে- নিজ দেশের বাইরে অবস্থানরত ভেনেজুয়েলার মানুষের পরিস্থিতি সম্পর্কে গত এক বছরে বিশদভাবে পাওয়া তথ্য। তাদের অনেকেই আইনত শরণার্থী কিংবা আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধিতও নন, তবে সুরক্ষা ও সহায়তা তাদেরও প্রয়োজন রয়েছে।
প্রতিবেদন সম্পর্কে শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি বলেছেন, ‘পরিবর্তিত বাস্তবতায় আজ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুতির পরিমাণই যে শুধুমাত্র বেড়েছে তা নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যাগুলো আরও দীর্ঘমেয়াদী হচ্ছে। নিজ দেশে প্রত্যাবাসন বা নতুন কোথাও ভবিষ্যত গড়ে তোলার কোনো আশা ছাড়া এইসব মানুষ বছরের পর বছর কাটিয়ে দিচ্ছে নানা অনিশ্চয়তায়, এটা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজন একেবারে নতুন এবং অবার উদার দৃষ্টিভঙ্গি। তাদের দুর্ভোগের মূলে বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা সংঘাতগুলোর সমাধানে দরকার দৃঢ় প্রত্যয়।’
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।