দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এ যাবত গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্ত বলছে, বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনা রোগে নারীদের তুলনায় পুরুষদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। তবে ভারতে পুরুষের চেয়ে নারীর মৃত্যুই বেশি!
পুরুষদের মৃত্যুসংখ্যা বেশির উদাহরণস্বরুপ বলা যায় ইতালি, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের তুলনায় অনেক বেশি পুরুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এবং আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই পুরুষ।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়েরর ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর বিজ্ঞানী সেবরা ক্লেইন, ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণের ক্ষেত্রে লৈঙ্গিক পার্থক্য নিয়ে বিশেষজ্ঞ এই বিজ্ঞানী বলেছেন যে, ‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে বয়স্কদের মতোই সমান ঝুঁকিতে রয়েছেন পুরুষরা।
তবে ভারতে সেই চিত্র কিছুটা গোলমেলে এবং হতবাক করার মতোই। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানীর করা নতুন এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, যদিও ভারতের আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই হলেন পুরুষ তবে মৃত্যুর ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেশি।
গত ২০ মে পর্যন্ত ভারতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃতদের তালিকার ওপর ভিত্তি করে চালানো এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, ভারতে যতোজন নারী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে। বিপরীতে পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে মোট আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যুহার ২ দশমিক ৯ শতাংশ।
ভারত-মার্কিন বিজ্ঞানীদের ওই গবেষণায় আরও দেখা যাচ্ছে, ভারতে ৪০ হতে ৪৯ বছর যেসব নারীর ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে তাদের মধ্যে ৩ দশমিকই মারা গেছেন। অপরদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে একই বয়সী আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ছিলো ২ দশমিক ১ শতাংশ। এছাড়াও ৫ হতে ১৯ বছর বয়সী মৃতদের সবাই নারী, এক্ষেত্রে পুরুষ নেই।
ওই গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক এস ভি সুব্রামানিয়ানকে এর কারণ কি জানতে চাইলে তিনি সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ‘মোটের ওপর আমরা এই উপসংহারে পৌঁছেছি যে, যখন আক্রান্ত হন, তখন বাঁচার জন্য (ভারতে) নারীরা নির্দিষ্ট কোনো সুবিধাই পান না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের (নারীদের) ক্ষেত্রে এমন ঘটনার পেছনে বায়োলজিক্যাল গঠন কতোটা দায়ী ও এর নেপথ্যে সামাজিক কারণগুলো কতোটা জড়িত তাও অস্পষ্ট। তবে লৈঙ্গিক পার্থক্যের বিষয়টি ভারতীয় প্রেক্ষাপটের জন্য এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণও হতে পারে।’
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।