দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বসেরা শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের উদ্ভাবিত করোনা ভাইরাসের টিকা মানব দেহে প্রয়োগ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।
আগামী আগস্ট কিংবা সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবর নাগাদ এই টিকাটি বাজারজাত করা সম্ভব হবে।অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত বহুল আলোচিত এই ভ্যাকসিনটি বাজারজাত করার কাজ করে যাচ্ছে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আস্ট্রাজেনেকা। ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে করোনা টিকার ৪০ কোটি ডোজ প্রি-অর্ডার করতে একটি প্রাথমিক চুক্তিও করেছে ইউরোপের ৪টি দেশ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস হতে এ টিকা মানুষকে কতোটা ভালোভাবে সুরক্ষা দিতে পারে সেটি যাচাই করতেই দফায় দফায় এই ট্রায়ালের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।বিজ্ঞানীরা এই টিকার সফল প্রয়োগে এখন আশাবাদী।
যুক্তরাজ্যে পরবর্তী ধাপে ১০ হাজার ২৬০ শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর এই টিকাটি প্রয়োগ করা হবে। এর বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলেও এই টিকার ট্রায়াল সম্পন্ন হবে।
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে এই টিকা নিয়ে কথা বলেন অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের প্রধান অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড। তিনি জানিয়েছেন, ক্লিনিক্যাল স্টাডিজ খুব ভালোই চলছে। আমরা এখন ভ্যাকসিনটি কতো বয়সের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের প্রক্রিয়া চালিত করতে পারে সেটি মূলত মূল্যায়ন করে দেখছি। এছাড়াও এটি ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম কিনা তা-ও পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
আশা করা যাচ্ছে যে, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিনটির উন্নয়ন কাজ বা বাজারজাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হয় করোনা ভাইরাস। তারপর বিশ্বের ২১৩ টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এই করোনা ভাইরাস। এই পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ লাখ ২০ হাজার ১৯৯ জন। আর মারা গেছেন ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৫৯ জন। অপর দিকে সুস্থ হয়েছেন ৫১ লাখ ৬৯ হাজার ২৭০ জন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।