দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে এবার অনলাইনে চালু হচ্ছে এই ঈদে কোরবানির পশুর হাট। ঘরে বসেই গরু কেনা যাবে আবার চাইলে মাংস বাসায় পৌঁছে দেবে বিক্রেতারা।
অনলাইনে গরু কেনাবেচার ধারণাটি এবারই নতুন নয়। এর আগেও এটি হয়েছে। তবে এবার এর বিস্তার ঘটতে চলেছে ব্যাপকভাবে। আগের বছরগুলোতে হয়তো দুই একটি প্রতিষ্ঠান করতো এই কাজ। এবার করোনার কারণে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানই অনলাইনে গরু বেচাকেনা শুরু করছে। এরমধ্যে ঢাকায় সাদেক অ্যাগ্রো, বেঙ্গল মিটসসহ বেশ কয়েকটি খামার উল্লেখ যোগ্য।
এবার করোনা সংকটে হাট নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কারণে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও অনলাইনে বেচাকেনার ওপর জোর দেওয়া হয়। হাটে ভিড় না করে যতোটা পারা যায় অনলাইনেই বেচাকেনা করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার দুই মেয়র।
এই নিয়ে খামার মালিকদের সঙ্গে ৬ জুলাই বৈঠক করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। কীভাবে মানুষের চাহিদা মিটিয়ে কোরবানির পশু সরবরাহ করা সম্ভব সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। দু-এক দিনের মধ্যে এ নিয়ে হয়তো নির্দেশনাও আসবে।
খামারগুলোতে গরুর লাইভ ওজন দিয়ে বিক্রি করা হবে। আবার কেও চাইলে ওজন না দিয়েও দরদাম করেও কিনতে পারবেন। অনলাইনের বিষয়ে প্রতিটি খামারের নিজস্ব ওয়েবসাইটে গরুর ছবি, ওজন উল্লেখ করা থাকবে। সাথে থাকবে দামও। কাস্টমারের পছন্দ হলে সুবিধামতো সময় খামারে গিয়ে গরু দেখে দাম দিয়ে আসতে পারবেন।
এখানে ঠকার সুযোগ খুবই কম। কেনোনা গরু যখন খামার থেকে বের করে দেবে তখন ওজন করার মাধ্যমে কাস্টমারের দাম চূড়ান্ত হবে। সেক্ষেত্রে ওজন কমলে দামও কমবে, আবার ওজন বাড়লে দামও বাড়বে। কাজেই বড় দেখিয়ে ছোট গরু দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
করোনা সংকটের শুরু হতেই অনলাইনে গরু বেচাকেনা শুরু করেছে সাদেক অ্যাগ্রো। সাধারণত ৩০০ কেজি পর্যন্ত ওজনের গরু অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। জীবন্ত গরু প্রতি কেজির দাম ধরা হচ্ছে ৩৭৫ টাকা। ক্রেতা চাইলেই কোরবানির দিন গরু জবাই করে বাসায় মাংস পৌঁছে দেবে সাদেক অ্যাগ্রো নামে এই প্রতিষ্ঠানটি।
সেক্ষেত্রে কসাই এবং পরিবহন খরচ মিলে গরুর দামের উপর ১৫ শতাংশ বাড়তি টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ যতো টাকার গরু তার ওপর ১৫ শতাংশ টাকা জবাই ও মাংস পৌঁছানোর জন্য ক্রেতাকে বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে ক্রেতাকে কোনোরকম হাত দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। গরু জবাই করে ৩ কেজি ৫ কেজির প্যাকেট করার পর মাংস বাসায় পৌঁছে দিবে সাদেক অ্যাগ্রো।
এই বিষয়ে সাদেক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, অনলাইনে বেচাকেনা কিন্তু আগেও হয়েছে। এবার করোনার কারণে বেশি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। সাধারণত খুব বড় গরু যারা কিনবেন তারা এখানে জবাই করবেন না। এখানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার গরু যেগুলো, সেগুলো জবাই করার অর্ডার আমরা ইতিমধ্যেই পেয়েছি। ইতিমধ্যে ২২০টি গরুর বুকিংও আমরা পেয়েছি। ঈদের আগে হয়তো আরও বেশি পাবো।
ঈদের দিন হতে শুরু করে ঈদের তিন দিনই খামারেই কোরবানির করার ব্যবস্থা থাকবে। এরজন্য দক্ষ কসাই এবং ইমাম প্রস্তুত করা হয়েছে। সাদেক অ্যাগ্রোর মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও অনলাইনে গরু কেনাবেচা শুরু করেছে। নিজস্ব গাড়ি দিয়ে বাড়ি বাড়ি মাংস পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এইসব প্রতিষ্ঠানের।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।