দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১১ আগস্ট বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছিল রাশিয়া। এখন করোনা ভ্যাকসিনের আনুষ্ঠানিক উৎপাদন শুরু করলো দেশটি।
সফলতার কথা প্রকাশ হতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হতে টিকার চাহিদা পেতে শুরু করে রাশিয়া। ইতিমধ্যেই ২০টি দেশ হতে ১০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের অর্ডার পেয়েছে রাশিয়া।
রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে শনিবার বার্তা সংস্থা আরটি জানিয়েছে, রাশিয়া কোভিড-১৯-এর নতুন ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ উৎপাদন শুরু করেছে। রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাসকো জানিয়েছেন, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এই ভ্যাকসিনটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাবে বলেও মনে করা হচ্ছে। সোভিয়েত রাশিয়ার তৈরি বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইটের নামের সঙ্গে মিল রেখে এই ভ্যাকসিনের নামকরণ করা হয় স্পুটনিক-৫।
প্রতিবেদনেটিতে বলা হয়, মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি এই ভ্যাকসিনের দুটি উপাদানও রয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক প্রক্রিয়া সচল করতে হলে এই দুটি উপাদানের ইনজেকশন তিন সপ্তাহ অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। মস্কো জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ২০টি দেশ হতে ১০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের অর্ডারও পেয়েছে রাশিয়া।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয় রাশিয়া। তবে কিছু পশ্চিমা বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন যে, তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা বজায় রাখতে হয়তো সক্ষম হয়নি রাশিয়া। মানবদেহে এর প্রভাব পর্যালোচনা না করেই অনুমোদন দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন স্পাহনের দাবি করেছেন, সঠিকভাবে টেস্ট করা হয়নি এই ভ্যাকসিনটি। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলোকেও যাচাই করা হয়নি। অনেকের মৃত্যুও হতে পারে সে কারণে।
একই ধরনের মতামত দিয়েছেন ফ্রান্সের গবেষক ইসাবেল ইমবার্ট। তিনি বলেছেন, এই গবেষণা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল এখন পর্যন্ত আমরা জানিই না। এই ভ্যাকসিন কতোটুকু নিরাপদ তা নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কার্যালয় হোয়াইট হাউসের করোনা টাস্কফোর্সের সদস্য এন্থোনি ফাউচি তো এই গবেষণার তথ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাই রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাসকো বলেন, অন্যদের এসব দাবি একেবারেই ভিত্তিহীন। আমাদের ভ্যাকসিন গবেষণা সফল ও তা মানবদেহেও নিরাপদ। তিনি জানান, ভ্যাকসিনের তথ্য খুব শীঘ্রই প্রকাশিত হবে এবং আশা করা যায় যে উদ্বেগের কিছুটা উপশমও হবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।