দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বায়োএনটেক-ফাইজারের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা ১২ হতে ১৫ বছরের শিশুদের জন্য শতভাগ কার্যকর বলে নিশ্চিত করেছে ওই সংস্থা দু’টি।
সম্প্রতি বায়োএনটেক-ফাইজার জানিয়েছে, আগামী বছর স্কুলগামী বাচ্চাদের দেহে প্রয়োগের জন্য এই টিকা অনুমোদনের প্রত্যাশা করছেন তারা।
এক বিবৃতিতে জানানো হয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২ হাজার ২৬০ কিশোর-কিশোরীর ওপর তিন ধাপে পরিচালিত ট্রায়ালে শতভাগ কার্যকারিতা ও মজবুত অ্যান্টিবডি দেখিয়েছে এই টিকা।
বুধবার ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলবার্ট বোরলা জানিয়েছেন যে, টিকা নিয়ে পাওয়া এই নতুন তথ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনসহ (এফডিএ) অন্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। টিকাটি এই বয়সীদের ওপর প্রয়োগের অনুমোদন পাওয়া গেলে পরের বছর স্কুল খুলে দেওয়া খুব সহজ হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ফাইজারের চালানো পরীক্ষায় যুক্ত ছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২ হাজার ২৬০ জন রোগী। যারমধ্যে টিকা সদৃশ্য ভ্যাকসিন নেওয়া গ্রুপের ১৮ জনের করোনা হলেও টিকা নেওয়া কেওই করোনায় আক্রান্ত হয়নি। ফাইজার বলেছে, এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, এই বয়সীদের ওপর টিকাটি শতভাগ কার্যকর। এছাড়াও অপেক্ষাকৃত বয়স্কদের মধ্যে টিকার যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, শিশুদের ক্ষেত্রে তা অনেক বেশিই সহনীয়।
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ফাইজার সিইও আলবার্ট বোরলা বলেছেন, ‘অল্প বয়সী জনগোষ্ঠীর ব্যবহারের জন্য আমাদের ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ার গুরুত্ব আমরা ভালোকরেই বুঝতে পারছি। ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের ওপর চালানো পরীক্ষার ফলাফল হতে আমরা উৎসাহ পাচ্ছি।’
ফাইজার জানিয়েছে যে, ইতিপূর্বে ১৬ হতে ২৫ বছর বয়সীদের ওপর চালানো পরীক্ষায় টিকা নেওয়ার পর যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হতে দেখা যায় ১২ হতে ১৫ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে তার পরিমাণ আরও অনেক বেশি।
জন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মহামারির অবসান ঘটাতে শিশুদের টিকা দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কোনও কমিউনিটির যথেষ্ট সংখ্যক প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দেওয়া হয়ে গেলেও শিশুরা এর বাইরে থাকলে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করা সম্ভব হয়তো নাও হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় দেশটির মোট লোক সংখ্যার ২০ শতাংশই শিশু। হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করতে হলে দেশটির ৭০ থেহতে ৮৫ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি থাকতে হবে। তাছাড়া দেশটির অনেক প্রাপ্ত বয়স্কই টিকা নিতে অস্বীকৃতিও জানাতে পারেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।