দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনার কারণে আমাদের জীবনের নিত্যসঙ্গী হয়েছে মাস্ক। ঘরের বাইরে বের হলেই মাস্ক ছাড়া বিকল্প নেই। তবে এই মাস্কগুলো কখন কিভাবে বদলাতে হবে সেটি আমাদের অনেকের অজানা। আজ জানবো সেই বিষয়টি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, করোনার নতুন স্ট্রেনের হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপাই হলো সঠিক পদ্ধতিতে মাস্ক পরা, ভিড় অর্থাৎ লোক সমাগম এড়িয়ে চলা এবং পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা। যে কারণে এই প্রাণঘাতি করোনাকালে নিজেকে সকল প্রকার ভাইরাস হতে মুক্ত রাখতে বিশ্বজুড়ে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার। ঘর থেকে বের হলেই মাস্ক পরা জরুরি মনে করছেন সবাই। তবে প্রশ্ন হলো, একটি মাস্ক কতোদিন ব্যবহার করা যায়? সেই বিষয়েও আমাদের স্পষ্ট ধারণা দরকার। আজ আসুন সেই বিষয়টি জেনে নেই।
# প্রথমত মাস্ক আপনাকে এমনভাবে পরতে হবে যাতে আপনার মুখ এবং নাক সম্পূর্ণভাবে ঢাকা থাকে। মাস্ক পরার পর যদি শুধু নাক কিংবা মুখের কোনো একটা অংশ খোলা থাকে, তাহলে মাস্ক পরার কোনো অর্থই থাকে না। তাই খেয়াল রাখবেন আপনার মাস্ক যেনো নাকের ওপর থেকে শুরু করে গোটা মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখতে পারে। তাই মাস্ক কেনার সময় সেটি কতোটা চওড়া তা ভালো করে দেখে কেনাই ভালো।
# সাধারণত সুতি কাপড়ের তৈরি মাস্ক তাড়াতাড়ি ছিড়ে যায়। রঙ হালকা হয়ে গেলে এবং মাস্কে ছোট থেকে বড় কোনো ফুটো দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই মাস্ক বাতিল করুন। মাস্কের মধ্যে ফুটো দেখা দিলে সেই মাস্ক কখনও পরা যাবে না। কারণ করোনার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে থাকা অন্যান্য ভাইরাসও আপনাকে তখন আক্রমণ করতে পারবে।
# আপনি কখনও মুখের থেকে ঢিলা মাস্ক ব্যবহার করবেন না। মাস্ক ঢিলা হয়ে গেলে তা বারবার সরে যাবে ও সেক্ষেত্রে আপনাকে বারবার মুখে হাত দিতে হবে। যে কারণে আপনার হাতের ধুলো ময়লা কিংবা কোনো জীবাণু মাস্কে লেগে যাবে।
# বর্তমানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। মাস্ক পরে যদি দেখেন আপনার ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, যেমন ধরুন- ব্রণ, র্যাস, চুলকানি কিংবা মুখ ফুলে ওঠা। তাহলে সেক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মাস্ক পরিবর্তন করুন।
# আপনার মাস্কের নোজ ক্লিপ আলগা হয়ে গেলে সেই মাস্ক দ্রুত সময়ের মধ্যে পাল্টে ফেলুন। আবার কানে লাগানোর ইলাস্টিক কিংবা কাপড় যদি আলগা হয়ে যায়, তাহলেও আপনার মাস্ক পরিবর্তন করতে হবে।
# যদি আপনার মাস্কটি সূতি বা ওয়াশেবল মাস্ক হয় তাহলে অবশ্যই ধুয়ে, শুকিয়ে তারপর আবার পরুন। এক সমীক্ষা বলছে, করোনা পরিস্থিতিতে সঠিক মাস্ক পরলে প্রায় ৭০ শতাংশ করোনা হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। শুধুমাত্র মাস্ক পরলেই হবে না, সেটি সঠিক সময় বদলও করতে হবে।
# যদি আপনার কখনও মাস্ক পরে অস্বস্তি হয় তাহলে অবশ্যই সেই মাস্ক এড়িয়ে চলুন। আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই মাস্ক পরে থাকলেও অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। এতে করে শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই মাস্ক বদলে নিতে হবে।
# মাস্ক পরা অবস্থায় মাস্কের বাইরের অংশে হাত না দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কারণ বাইরের অংশে জীবাণু লেগে থাকতে পারে। তাই এই বিষয়টি সকলকে দৃষ্টি দিতে হবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।