দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাশিয়া ৩ হাজার বছর আগের ভয়ঙ্কর যোদ্ধাদের ‘ক্লোন বাহিনী’ বানানোর পরিকল্পনা করছে! কী জন্য এই বাহিনী গড়তে চায় রাশিয়া?
যদিও এখনও বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই শোইগু সরকারি মঞ্চে এই বিষয়ে বেশ জোরালো ইঙ্গিতও দিয়েছেন। রাশিয়া হলো বিশ্বের বৃহত্তম সেনাশক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেনার সংখ্যায় এবং ক্ষমতার জোরেও বিশ্বের অন্যতম সেরা এই দেশটির সেনাবাহিনী।
সম্প্রতি রাশিয়ার সর্বেসর্বা ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর নির্দেশ পেয়ে কাজ শুরু করেছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই। পুতিনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সেরগেই রাশিয়ার সেনাপ্রধানও।
সেরগেই তার প্রতি পুতিনের সেই প্রত্যাশার মানও রেখেছেন। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর জন্য বিশেষ ক্লোন যোদ্ধাদের বাহিনী বানানোর ভাবনা তার মাথা হতেই এসেছে। সে জন্যই ৩ হাজার বছরের পুরনো ওই যোদ্ধাদের দেহাবশেষ হতে সংগৃহীত ডিএনএ নিয়ে গবেষণার কাজও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।
সিথিয়ানস নামে ওই যাযাবর যোদ্ধাদের দেহাবশেষ প্রায় দু’দশক আগে উদ্ধার করা হয়েছিল সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চল হতে। প্রকৃতিগত যোদ্ধা ও যাযাবর জাতি এই সিথিয়ানসরা মোঙ্গল বংশধরদের পূর্বপুরুষ। খ্রিস্টপূর্ব নবম শতাব্দী হতে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী পর্যন্ত তারা ইরানের বাসিন্দা ছিলেন। একটা সময় ইউরেশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় দৌরাত্ম্য চলতো এই সিথিয়ানসদের দ্বারা। পরে ইউরেশিয়ার একটা বড় অংশের দখল নিয়েছিল মোঙ্গলীয়ানরা। এরা এসেছিল ভারতেও। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই সেই যোদ্ধাদের জিন থেকেই হুবহু নকল সেনা বানাতে চাইছেন রাশিয়ার জন্য। অন্তত তিনি নিজে তেমন ইঙ্গিতইা দিয়েছেন।
এপ্রিলের মাঝামাঝি রাশিয়ার জিওগ্রাফিকাল সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই। সেখানে তিনি এই সিথিয়ান প্রজাতির কবরের প্রসঙ্গও তোলেন। সেরগেই বলেছিলেন, “সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা হতে পাওয়া সিথিয়ান যোদ্ধাদের ডিএনএ থেকে কিছু একটা বানানো যাবে বলে আমি আশা করছি। তা ডলি দ্য শিপের চেয়ে ভালো কিছুই হবে হয়তো।”
জিনের গঠন হুবহু নকল করে নতুন প্রাণের জন্ম দেওয়াকে ক্লোনিং বলা হয়ে থাকে। ডলি নামে একটি ভেড়ার নকল বানিয়ে বিজ্ঞানীরা আগেই দেখিয়েছেন স্তন্যপায়ী প্রাণীদের হুবহু নকল বানানো অসম্ভব নয়। ওই মঞ্চে সেরগেই সরাসরি মানুষের ক্লোন বানানোর উল্লেখ না করলেও বিজ্ঞানীরা বুঝেছিলেন প্রকৃতপক্ষে তা-ই বলতে চাইছেন সেরগেই।
সেরগেই স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ওই যোদ্ধাদের দেহাবশেষ থেকে এমন কিছু জৈব কোষের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা তাদের ক্লোন বানানোর জন্য কাজে লাগানোও যেতে পারে। তবে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মানুষের ক্লোন বানানো কি আদৌ কখনও সম্ভব? তাও আবার কবর খুঁড়ে বের করা হাজার হাজার বছরের পুরনো দেহাবশেষ হতে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, সাইবেরিয়ার যে অঞ্চলে সিথিয়ানস সেনাদের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে, সেখানকার তাপমাত্রা অত্যন্ত কম। সারা বছরই সেখানকার মাটি ঠাণ্ডায় জমে থাকে। যে কারণে ৩ হাজার বছরের পুরনো দেহ থেকেও কিছু জৈব অবশেষ পাওয়া সম্ভব যা ক্লোন তৈরির কাজে লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে সমস্যা আসলে অন্য স্থানে। মানুষের ক্লোন এ পর্যন্ত তৈরিই করে উঠতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। অন্তত প্রকাশ্যে তেমন কোনো দাবি করেননি কেওই। এক্ষেত্রে বেশ কিছু জটিলতাও রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। সাধারণত ক্লোন তৈরির জন্য পুরনো কোষ থেকে নতুন কোষে নিউক্লিয়াস স্থানান্তর করার প্রয়োজন পড়ে। তারজন্য প্রথমে নতুন কোষের নিউক্লিয়াসটিকেই সরাতে হয়। মানব কোষের দু’টি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রোটিনকে অক্ষত রেখে সম্পূর্ণ করতে হবে এই প্রক্রিয়াটি।
তবে সমস্যা হলো এই দুই প্রোটিন নিউক্লিয়াসের এতো কাছে থাকে যে, তাদের ক্ষতি না করে নিউক্লিয়াসটিকে সরানো যাবে না। এই সমস্যার কারণেই আজ পর্যন্ত মানুষের ক্লোন তৈরি করা সম্ভব হয়নি। আবার মানুষের ক্লোন বানানো আইনত বৈধ নয়। সেরগেইয়ের প্রস্তাবের কথা ছড়িয়ে পড়ার পর তাই বিস্মিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
অনেকেই আবার প্রশ্নও তুলেছেন, যদি কোনওক্রমেই রাশিয়া ওই আইনি বাধা ও বৈজ্ঞানিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠে তার পরেও ওই নকল যোদ্ধাদের সেনাবাহিনীর স্বপ্ন কী কখনও পূরণ হবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর? দুর্ধর্ষ যোদ্ধা ও অসাধারণ ঘোড়সওয়ার সিথিয়ানসদের জিন এই জামানায় যোদ্ধা হিসেবে কতোটা দক্ষ বানাবে ওই ক্লোন সেনাদের? সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে।
সেরগেইয়ের ভাবনা অনুযায়ী যদি সব ঠিকঠাক মতো চলে, তা হলেও অন্তত ২০ বছর সময় লাগবে এই সেনাবাহিনী গঠন বা তৈরি করতে। আবার প্রশ্ন উঠেছে, এই সেনাদের শিশু অবস্থায় দেখভালই বা কারা করবেন, আইনত তাদের বাবা-মায়ের দায়িত্বই বা বর্তাবে কাদের ওপর? সেই প্রশ্নও উঠেছে।
বিজ্ঞানীরা এও বলেছেন, জিন আমাদের স্বভাবগত কিছু বিষয়ে প্রভাব ফেলে এটি ঠিক। তবে চারিত্রিক গঠন কিংবা ভাবনার পুরোটাই তৈরি হয় আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ও বেড়ে ওঠার পরিবেশের ওপর। এখন প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে যে, সিথিয়ানসদের জিন থেকে তৈরি ওই ক্লোন সেনারা কি বদলে দেবে যুদ্ধ ও সেনার সার্বিক সংজ্ঞা? আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া এইসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব নয়। তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।