দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৃত্যুর পর নিকট আত্মীয়রা কান্নাকাটি করে সেটিই এতোদিন আমরা দেখে আসছি। তবে এবার শোনা গেলো ভাড়াটে কাদুনিদের কথা! যাদের পেশায় হলো মরা বাড়িতে উচ্চস্বরে কান্না!
একটি গ্রামের দৃশ্য। গ্রামজুড়ে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রকাণ্ড অট্টালিকার উঠানে ঠাকুরের মৃতদেহ ঘিরে সকলেই জড়ো হয়েছেন। ঐতিহ্য মেনে ঘরের ভেতরই বসে রয়েছেন বাড়ির অন্যান্য নারীরা। উঠানে জড়ো হওয়া গ্রামের মানুষজন ঠাকুরের ভালো কাজের প্রশংসা করছেন এবং এক পাশে কালো কাপড় পরিহিত একদল নারী দেদারছে কেঁদেই চলেছে।
ওই নারী ফোঁপাচ্ছেন, বুক ও মাটি চাপরাচ্ছেন। তাদের মোটামোটা চোখের পানিতে গালে দাগও পড়ে গেছে। তবে সেটি মুছে ফেলা নিয়ে তারা মোটেও চিন্তিত নন। এই সময় সকলেই তাকিয়ে তাকিয়ে তাদের কান্নাকাটি দেখছেন।
তবে এমন নয় যে, এবারই প্রথম তারা কোনও বাড়িতে কান্না করছে, আবার এই কান্না তাদের শেষবারও নয়। ভারতের এই পেশাদার সম্প্রদায় যারা রুদালি নামেই পরিচিত, অর্থের বিনিময়ে বিলাপ করে থাকেন! এদেরকে কান্নার জন্য ভাড়া করে আনা হয়।
এইসব রুদালিরা কেবল মৃত্যুর দেবতা ইয়ামার পছন্দের রঙ কালো পোশাক পরে থাকেন। তারা মূলত সমাজের নিচু বর্ণের লোক। তাদের বিয়ে করবারও কোনো অনুমতি নেই, কেনোনা যদি তারা পরিবারের মধ্যে সুখ খুঁজে পায় তাহলে শেষকৃত্যানুষ্ঠানে এসে কে কাঁদবে?
সবার কাছে এটি অদ্ভুত একটি পেশা মনে হলেও ভারতের রাজস্থানে বহু বছর ধরেই এই ঐতিহ্য টিকে রয়েছে। আসলে অন্য সম্প্রদায়ের সামনে উঁচু বর্ণের নারীদের আবেগ প্রদর্শন করার কোনো অনুমতি নেই। তারা সাধারণ পর্দার মধ্যেই অট্টালিকার ভেতর থাকেন।
কোলকাতার সাংবাদিক ও লেখক নিধি দুগার কুন্দালিয়া তার ‘দ্য লস্ট জেনারেশন’ বইটিতে প্রায় বিলুপ্ত কিছু প্রথা ও পেশার কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানেই তিনি এই রুদালিদের কথাও বলেন। তিনি বলেছেন, আমাদের রাজপরিবারের কেও মারা গেলে কাওকে না কাওকেতো কাঁদতেই হবে, তাই না? নারীদের মস্তিষ্কে হারানো মানুষদের জন্য শোক করার বিষয় গাঁথা রয়েছে। তাদের হৃদয়ও খুব দুর্বল। আমাদের পরিবারের নারীদের ঘরের বাইরে কোনও ধরনের অনুভূতি প্রকাশের অনুমতিই নেই। উঁচু বর্ণের নারী সাধারণ মানুষজনের সামনে এভাবে কান্নাকাটি করেন না বা করতে পারেন না। এমনকি যদি তাদের স্বামীও কখনও মারা যায়, তাহলেও নিজেদের আত্মমর্যাদা বজায় রাখতেই হবে। এই নিচু বর্ণের রুদালিরা তাদের হয়ে কান্না করেন।
তবে এমন নয় যে, রুদালিরা ইচ্ছাকৃতভাবেই এই ধরনের পেশা বেছে নিয়েছেন। তাদের এমনটা করতে বাধ্য করা হয়ে থাকে। তাদের চোখের জলের বিনিময়ে ধনীরা পয়সা দেন, শান্তির নিঃশ্বাস নেন। আমরা কী কখনও তাদের দোষ দিতে পারি?
এই সভ্য সমাজে এসব নারীদের নিচু অবস্থান দেওয়া হয়, যে কারণে তারা প্রায়ই শোষণেরও শিকার হন। এসব নারীদের অনেকেই উঁচু বর্ণের ব্যক্তিদের অবৈধ সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন। তবে যদি তারা মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন, তাহলে সে তাৎক্ষণিকভাবে কাঁদিয়েদের একজন হয়ে যান। সমাজে তাদের এই ধরনের অবস্থান দিয়ে রুদালির মধ্যে একটি কথা সব সময় প্রচলিত রয়েছে। আর তা হচ্ছে- খালি পায়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে যেতে বললেও কষ্ট পাবো না কিন্তু একটি মেয়েসন্তানও যেনো ঘরে না আসে। ছেলের জন্ম দিলেও সেই সন্তান কখনও বাবার নাম ব্যবহার করতে পারেন না। কাজেই সমাজের কাছে তারা অচ্ছুত বলেই পরিচিতি লাভ করেন। এভাবেই পতিত মানুষদের কাতারে নাম লেখান রুদালিরা। কি অদ্ভুত তাদের জীবন!!
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।