দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জীবন ও জীবিকা একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আর সেই দুটিকে এবার গুরুত্ব দিতে গিয়ে এই মহা সংকটের মধ্যেও সবকিছু খুলে দিতে হয়েছে।
২১ আগস্ট ঈদুল আজহার পর টানা ১৯ দিনের বিধিনিষেধ তথা ‘লকডাউন’ শেষে আজ (১১ আগস্ট) থেকে মানুষের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে গণপরিবহন। সেই সঙ্গে অফিস-আদালত ও দোকান-পাট এবং শপিংমলও খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সবকিছু উন্মুক্ত হলেও সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধান এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি নিশ্চিত করতে কঠোরতা দেখানোর কথা বলেছে সরকার।
গত ৮ আগস্ট এই সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ১১ আগস্ট থেকে সব সরকারি-আধাসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট ও শপিংমল ও গণপরিবহন চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।
এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, সড়কে মোট পরিবহনের অর্ধেক চলাচল করবে। প্রতিটি জেলায় স্থানীয় প্রশাসন অর্ধেক বাস চলাচলের সংখ্যা নির্ধারণ করবে, কোনো অবস্থাতেই দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। দুই আসনে এক যাত্রী ও ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির বিধানও থাকছে না। অর্থাৎ স্বাভাবিক সময়ের ভাড়ায় ফিরে এলো গণপরিবহন।
করোনা প্রতিরোধে গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ শুরু হয় সারাদেশে। ঈদের সময় ৮ দিন বিরতি দিয়ে গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা হতে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার। এই সময় গণপরিবহন, অফিস এবং দোকান-পাট বন্ধ রাখা হয়েছিলো। তবে ইতিমধ্যে গত ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়া হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বিধি-নিষেধ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিলো।
এদিকে বিধিনিষেধ শিথিলের পর আজ পূর্ণ উদ্যোমে শুরু হয়েছে কাজ-কর্ম। রাস্তায় আবার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে। কর্ম-চাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে বাণিজ্যিক এলাাক হিসেবে খ্যাত রাজধানী ঢাকার মতিঝিল এলাকা।
উল্লেখ্য, দেশে করোনা পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। যদিও করোনা আক্রান্ত সামান্য কমেছে। ৩১ শতাংশ থেকে নেমে ২৩ এর একটু বেশি ছিলো গতকালও। তবে মৃত্যু এখনও আগের মতোই রয়েছে। গতকালও ২৬৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে করোনায়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।