দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি আপনাকে প্রশ্ন করা যায়, আপনি না ঘুমিয়ে টানা কতো ঘণ্টা থাকতে পারবেন? বেশি হলেও ২৪ বা ৪৮ ঘণ্টা! কিন্তু এক ব্যক্তি টানা ৪৮ বছর না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন!
২৪ বা ৪৮ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে আপনি থাকতে পারেন তাকে তেমন একটা সমস্যা হবে না। তবে যদি দুই দিন না ঘুমিয়ে থাকেন তাহলে পরবর্তীতে আপনি হয়তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন। কারণ ঘুম মানুষের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য। দীর্ঘদিন রাত জেগে থাকলে এবং অনিদ্রার কারণে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
মানুষের মতো সব প্রাণীই ঘুমিয়ে থাকে। এমনকি মাছও ঘুমায়, তবে তারা অর্ধ মস্তিষ্ক জাগ্রত রেখেই ঘুমিয়ে থাকে। এমনকি উটপাখিরাও বিশ্রাম গ্রহণের সময় সজাগ দৃষ্টি রাখে শিকারি ধরতে। ঘুমালেই মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায়। ঘুম না হলে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে তার ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করতে ব্যর্থ হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন প্রাণীকূলের জন্য ঘুম কতোটা গুরুত্বপূর্ণ।
তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা অনুসারে দেখা যায়, ঘুম ব্যতীত কোনো মানুষই সুস্থভাবে দীর্ঘদিন বাঁচতে পারেন না। তবে কতোক্ষণ একজন মানুষ ঘুম ছাড়া থাকতে পারেন? টনি রাইট নামক এক ব্যক্তি ১৯৬৪ সালে টানা ২৬৪ ঘণ্টা অর্থাৎ ১১ দিন না ঘুমিয়ে গিনেস রেকর্ডে নাম লিখিয়েছিলেন।
কিন্তু এবার সেই টনি কিছুই না, ভিয়েতনামের এক কৃষক টানা ৪৮ বছর ধরে না ঘুমিয়ে দিন কাটাচ্ছেন দিব্যি। ৭৯ বছর বয়সী এই ব্যক্তি না ঘুমিয়েও দিব্যি সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেঁচে রয়েছেন। ১৯৪২ সালে ভিয়েনামে জন্ম গ্রহণ করেন এনগোক থাই নামে পেশায় কৃষক ওই ব্যক্তি। এই অদ্ভূত কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী ইতিমধ্যেই ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছেন।
দীর্ঘদিন না ঘুমিয়ে থাকার কারণ হিসেবে এই ব্যক্তি জানিয়েছেন যে, ১৯৭৩ সালের একদিনে হঠাৎ এনগোক থাইয়ের জ্বর হয়। এরপর থেকে তিনি চোখের পলক ফেলতেই যেনো ভুলে গেছেন। তার বিরল এই রোগ সম্পর্কে কারও জানা নেই। চিকিৎসকরাও তার অনিন্দ্রার পেছনের কোনো কারণ উল্লেখ করতে পারেননি।
দীর্ঘদিন না ঘুমানোর কারণে মানবদেহে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- বিরক্তিভাব, জ্ঞান কমে যাওয়া, বিভ্রান্তি, অবসন্নতা, অতিরিক্ত রাগ, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথাসহ বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিন্দ্রার কারণে মস্তিষ্ক ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। যে কারণে রোগী মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন না ঘুম পাড়া ব্যক্তি।
তবে এনগোক থাইয়ের বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। তিনি টানা ৪৮ বছর না ঘুমিয়ে থাকলেও তার তেমন কোনো শারীরিক সমস্যা এখন পর্যন্ত দেখা দেয়নি। শরীরেও তার কোনো অ্যানার্জির কমতি নেই। প্রতিদিন অন্তত ২ মাইল ঘাড়ে ১১০ বস্তা চাল বহন করেন কৃষক এনগোক। সেই সঙ্গে কৃষিকাজ, মাছ চাষ ইত্যাদিতেও পটু এই ব্যক্তি। চোখ বন্ধ রাখার অনেক চেষ্টা তিনি করেছেন, তবুও তাতে কোনো কাজ হয়নি। ঘুমের ওষুধ, মদসহ নানা ধরনের ভেষজ উপাদানও তার চোখে ঘুম এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করেও দেখেছেন, তবে শারীরিক কোনো জটিলতাই চোখে পড়েনি। শুধু লিভারের কার্যকারিতা কিছুটা কমে গেছে। তাছাড়াও সামগ্রিকভাবে সুস্থতার সঙ্গেই তিনি দিন কাটাচ্ছেন।
এই বিষয়ে এনগোক বলেছেন, ‘অনিদ্রা আমার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলেছে কি-না তা আমি কিছুই জানি না। তবে আমি এখনও সুস্থ রয়েছি এবং খামারের কাজগুলোও ঠিকমতোই করতে পারি।’
টানা ৪৮ বছর ধরে কীভাবে নিদ্রাহীন রয়েছেন তিনি? এই বিষয়টি সত্যিই অলৌকিক বলা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ইনসোমনিয়ার রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ঘুম ও জাগ্রত হওয়ার ব্যবধান তারা হয়তো বুঝতেই পারেন না। এই ব্যবধান পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতাটি তারা একেবারেই হারিয়ে ফেলেন। তারা শুধু অনুভব করেন যে ‘বিশ্রাম নিচ্ছেন’। তারা হয়তো ‘মাইক্রো ন্যাপস’ (ছোট ঘুম) নিয়ে বেঁচে থাকেন। যা কয়েক মিনিটের জন্যও হতে পারে। এনগোকও হয়তো ঠিক এভাবেই দিন পার করছেন!
এনগোকের নিদ্রাহীনতার এই অলৌকিকতা মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এখনও তাকে নিয়ে কোনো গবেষণায় হয়নি। সবাই যখন ঘুমিয়ে সময় কাটায়; এনগোক তখন খামারে শ্রম দেন বা রাত জেগে পুকুরের মাছ পাহারা দেন। ১৯৭৩ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২০ হাজার ৪৮০ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন এনগোক!
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।