দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাস্ক নিয়ে অবহেলা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের নানা দেশেই ঠাট্টা, তামাসা, মশকরা চলছে অবিবেচকদের মধ্যে। মাস্ক নিয়ে তামাসা করায় অবশেষে করোনায় প্রাণ হারাতে হলো এক ব্যক্তিকে!
মাস্ক না পরা, মাস্ক কানে বা থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখা, নাম কা ওয়াস্তে মাস্ক ব্যবহারের হাস্যকর চিত্র অহরহ দেখা যায়। করোনার বৈশ্বিক মহামারিতে মাস্ক যখন প্রায়-আবশ্যিক বলে ঘোষিত হচ্ছে, তখন মাস্ক বিষয়ক শৈথিল্য সত্যিই দু:খজনক বিষয়। আমেরিকার টেক্সাসের ওয়ালেস তেমন এক ব্যক্তি, মাস্ক নিয়ে তামাসা মাশুল দিয়েছেন নিজেই করোনায় মৃত্যুবরণ করে!
মাস্ক পরা কিংবা কোভিড বিধি মেনে চলার বিষয়ে বেজায় আপত্তি ছিল ওই ব্যক্তির! তিনি মনে করতেন যে, এ সব ব্যক্তিস্বাধীনতায় সরকারের নাক গলানোর চেষ্টা করা ছাড়া অন্য কিছুই নয়। তবে সেই বেপরোয়া মনোভাবের কারণেই প্রাণ দিতে হলো তাকে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ সপ্তাহ আইসিইউ-তে লড়াই করার পর হার মানলেন টেক্সাসের ৩০ বছর বয়সী যুবক সালেব ওয়ালেস।
ওই ব্যক্তির স্ত্রী জেসিকা সন্তানসম্ভবা। জেসিকা এবং সালেবের ৩টি সন্তানও রয়েছে, চতুর্থ সন্তানের জন্ম দেখে যেতে পারলেন না সালেব ওয়ালেস। সান অ্যাঞ্জেলোতে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন ‘অ্যান্ট মাস্ক ক্যাম্পেন’-এর পুরোধা সালেব ওয়ালেস। তার ধারণা ছিল যে, মাস্ক বাধ্যতামূলক করা ও কোভিড বিধি মেনে চলা আদতে ব্যক্তি স্বাধীনতায় সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছু নয়। তাই করোনা রুখতে কোনও দিনই তিনি মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি।
সেইসঙ্গে বাকিদের অনুপ্রাণিত করতে মাস্ক বিরোধী প্রচার, ‘ফ্রিডম র্যালি’ও চালিয়েছেন তিনি! ব্যক্তিজীবনে সরকারি হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ মানুষদের নিয়ে ‘সান অ্যাঞ্জেলো ফ্রিডম ডিফেন্ডার্স’ বলে একটি গ্রুপ বানিয়েছিলেন সালেব। তবে তার এই বিপ্লব কখনও করোনা সংক্রমণকে ঠেকাতে পারেনি!
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ৩০ জুলাই শ্যানন মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি হন সালেব। তার স্ত্রী জেসিকা জানিয়েছেন, প্রথম অসুস্থ হওয়ার পর ভিটামিন সি, জিঙ্ক, অ্যাসপিরিন ও আইভারমেকটিনের মিক্সার খাচ্ছিলেন সালেব। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাকে।
জেসিকার ভাষায়, ‘আমি মাস্ক পরতাম। অবশ্য তা নিয়ে সালেব কোনও আপত্তি করেনি।’ বিপরীত মনোভাবই দম্পতি হিসেবে তাদের পারফেক্ট করে তুলেছিল বলেই মনে করেন জেসিকা। ভ্যাকসিনের ব্যাপারেও তাদের কোনও আপত্তি ছিলো না। সন্তানদেরও সব রোগের ভ্যাকসিনই দিয়েছেন জেসিকা। নিজেও সেপ্টেম্বরে করোনার ভ্যাকসিন নেবেন বলে জানিয়েছেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।