দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিশুর যত্নে আমরা সব সময় সচেতন থাকি। তবে কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যায় পড়ি। তার একটি হলো ডায়াপারে শিশুর র্যাশ ওঠা। আজ জেনে নিন এগুলো কিভাবে সুরাহা করবেন।
সাধারণত শিশুর ত্বক থাকে অত্যন্ত কোমল। সংবেদনশীল এই ত্বক কিছু সময় ধরে বা বারবার প্রস্রাব এবংয় পায়খানার সংস্পর্শে এলে আর্দ্রতার কারণে ত্বকের তৈলাক্ত প্রাকৃতিক স্তরের প্রতিরোধ ভেঙেও যেতে পারে। এতে করে ত্বকে এক ধরনের লালাভ চাকার মতো হয়ে ফুলে ওঠে কিংবা অনেক সময় ফুসকুড়ির মতোও দেখা যায়। এই ধরনের সমস্যাকেই আমরা র্যাশ বলে থাকি।
শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়াপার ব্যবহারে কেনো র্যাশ হয় ও এই সমস্যা রেখে তাদের সুরক্ষা বিষয়ে একজন চিকিৎসক এক সাক্ষাৎকারে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাঈমা সুলতানা বিস্তারিত বলেছেন।
তিনি বলেছেন, ডায়াপার বদলানোর পর স্বীকৃত কিছু আদর্শ করণীয় হলো, শিশুর তলপেট সব সময় কোমল সাবানের পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। এভাবে প্রতিটি ডায়াপার বদলে দেওয়ার পর শিশুর ডায়াপার অঞ্চলটি পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে দিতে হবে। তবে অনেক মা-বাবাই এখানে কৃত্রিম এমন কিছু ব্যবহার করে থাকেন (সুগন্ধি টিস্যু পেপার এবং পরিষ্কার করার বিশেষ উপকরণ), যার কিছুটা শিশুর ত্বকে রয়ে যায়। এই ধরনের জিনিস ত্বকের জন্য উত্তেজকও হতে পারে বিশেষ করে শিশুর র্যাশ থাকলে আরও ক্ষতি হতে পারে।
ডা. নাঈমা সুলতানা আরও বলেছেন, ডায়াপার র্যাশ দ্রুত সেরে উঠতে পারে যদি আক্রান্ত স্থানে খোলা বাতাস লাগতে দেওয়া যায়। সে জন্য ডায়াপার বদলে স্থানটি পরিষ্কার করার পর অন্তত ১০/১৫ মিনিট ডায়াপারহীন অবস্থায় শিশুকে রাখা প্রয়োজন। তারপরও র্যাশ অস্বস্তির উদ্রেক সৃষ্টি করলে ‘সিজবাথ’ করতে হবে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা সঞ্চয়েও সাহায্য করবে। এতে করে র্যাশ দ্রুত সময়ের মধ্যে সেরে উঠবে। সিজবাথ হচ্ছে একটি বড় গামলা বা টাবে কয়েক ইঞ্চি সহ্যকর হালকা গরম পানির মধ্যে নিতম্ব ডুবিয়ে বসিয়ে রাখাকে বলা হয়। শিশুকে এভাবে খেলনা দিয়ে হলেও সিজবাথে বসিয়ে রাখতে হবে। প্রতিটি সিজবাথের সময় ৫ হতে ১০ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে। এতে করে কিছুটা উপকার অবশ্যই হবে।
আবার ডায়াপার খুব টাইট হলে দুই উরুর কাছে ইলাস্টিকটা কেটে দিতে পারেন। এতে করে ডায়াপার আরও ঢিলে হবে। ডায়াপার ঢিলে হলে ভেতরে বাতাসও থাকবে। এটিও র্যাশ হওয়া থেকে রক্ষা করবে। ডায়াপার কেনার সময় এর শোষণক্ষমতা, আরামদায়ক এবং লিকপ্রুফ কিনা তা দেখে নিতে হবে।
ডা. নাঈমা সুলতানা আরও বলেছেন, বিশেষ করে ভ্রমণের সময়, রাতে বাচ্চাকে ঘুমানোর সময়, আবার কেও কেও সারাদিন ডায়াপার পরিয়ে থাকেন। যখনই পরান না কেনো, একটা দিকে খেয়াল রাখতেই হবে, ৪/৬ ঘণ্টার মধ্যেই ডায়াপার অবশ্যই পরিবর্তন করে ফেলতে হবে। বাচ্চা প্রস্রাব-পায়খানা করলে তা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিবর্তন করে দিতে হবে। ছেলেশিশুকে ডায়াপার পরানোর সময় সাবধানে পরাতে হবে, যাতে করে প্রস্রাব করলে তা গড়িয়ে ঠিকমতো শোষিত হতে পারে। তাই এই বিষয়গুলো ঠিক রাখতে হবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।