দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অসহ্য গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমরা কতো কিই না করি। কিন্তু ফল হয় না। এই গরমের কারণে সানস্ট্রোকের সমস্যাও হয়। কীভাবে এই সানস্ট্রোকের হাত থেকে যেভাবে রক্ষা পাবেন?
সাধারণত সানস্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ ও তার প্রতিকার জানা থাকলে, তার মোকাবিলা করাও হবে বেশ সহজ। নানা কাজে নিয়মিত বাইরে বেরোতেই হয় যাদের, তাদের হিটস্ট্রোক সম্পর্কে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে শিশুদের বা যারা এই গরমে খোলা জায়গায় দিনভর কাজ করেন (নিরাপত্তাকর্মী বা ট্রাফিক পুলিশ)। সানস্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ এবং তার প্রতিকার জানা থাকলে, তার মোকাবিলা করাও বেশ সহজ হবে।
কেনো হয় এই সানস্ট্রোক?
সাধারণত ড্রাই হিট, অর্থাৎ শুকনো গরমই হলো হিটস্ট্রোক কিংবা সানস্ট্রোকের মূল কারণ। সাধারণত বাতাসে হিউমিডিটি বেশি থাকলে, অর্থাৎ ময়েস্ট হিট এই স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশ কমিয়ে দেয়। মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার মনে করেন, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে যে থার্মোস্ট্যাট বিদ্যমান, তার মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে দেহের তাপ। অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে সেই হাইপোথ্যালামাসে সরাসরি প্রভাব পড়লেই হতে পারে হিটস্ট্রোক কিংবা সানস্ট্রোক। দেহতাপ অস্বাভাবিক অবস্থায় পৌঁছায়, বন্ধ হয়ে যেতে পারে ঘাম নিঃসরণ। শরীরে পানির অভাব এই অবস্থা আরও ত্বরান্বিত করে।
কীভাবে বুঝবেন সানস্ট্রোক হয়েছে?
বড়দের ক্ষেত্রে :
# ঝিমুনি ভাব হওয়া, অসংলগ্ন কথা বলা।
# প্রস্রাবের পরিমাণ খুব বেশি কমে যাওয়া এবং প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাওয়া।
# পেশিতে টান ধরা (যাকে বলে মাসল ক্র্যাম্প) ও মাথা ধরা।
# শরীর অত্যধিক গরম হওয়া, লাল হয়ে যাওয়া, ঘাম না বেরোনো ইত্যাদি।
# বমি হওয়া।
# এই সময় হার্টবিট বেড়ে যাওয়া।
# কখনও কখনও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
শিশুদের ক্ষেত্রে :
# খাবারে অনীহা হওয়া।
# অযথা মেজাজ বিগড়ে যাওয়া।
# প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং গাঢ় রং হওয়া।
# মুখের তালু ও জিভ শুকিয়ে যাওয়া, চোখের স্বাভাবিক আর্দ্রতা শুকিয়ে যেতে পারে।
# অবসন্নতা হওয়া।
# শরীরের কোনও জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া।
এই ধরনের উপসর্গ দেখা গেলেই ধরে নিতে হবে যে সেই ব্যক্তি বা শিশুটির হিটস্ট্রোক হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করার পরে প্রয়োজন হলে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
অবিলম্বে করণীয়
# ছায়ায় নিয়ে গিয়ে লম্বা করে শুইয়ে দেওয়া।
# পরনের জামাকাপড় যতোটা সম্ভব খুলে দেওয়া, যাতে করে শরীর থেকে লীনতাপ বেরিয়ে যায়।
# চোখে-মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। ভিজে তোয়ালে দিয়ে গা-হাত-পা স্পঞ্জ করা।
# পুরোপুরি হুঁশ আসার আগ পর্যন্ত কখনওই রোগীকে পানি খাওয়ানোর চেষ্টা করতে নেই। কারণ এতে করে খাদ্যনালির বদলে শ্বাসনালিতে পানি চলে গিয়ে হিতে বিপরীতও হতে পারে। রোগী একটু ধাতস্থ হওয়ার পর তাকে পানি খাওয়াতে হবে।
# ইনট্রা-ভেনাস স্যালাইন পুশ করতে পারলে রোগী সবচেয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।