দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্যাকপেইনের কারণে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে বসলে উঠতে অসুবিধা, তাছাড়া শোয়ার সময় ব্যাকপেইনের কারণে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়। এই ব্যাকপেইনের আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হবে।
কোমর ব্যথার প্রধান কারণ ডিস্ক প্রলাপ্স। ডিস্ক হচ্ছে মেরুদণ্ডের দুই হাড়ের মধ্যকার একটি বিশেষ জেলির মতো পদার্থ, যা দুটি হাড়কে বিভক্ত রাখে এবং পরস্পরের মধ্যে ঘর্ষণ হতে দেয় না। হাঁটাচলা বা যে কোন মুভমেন্টের সময় কশেরুকার মধ্যবর্তী হাড় স্পিংয়ের মতো কাজ করে। ডিস্কের ভেতরের অংশকে নিউক্লিয়াস পালপোসাস বলে যা জেলির মতো নরম এবং বাইরের অংশকে অ্যানুলাস ফাইব্রোসাস বলে। জেলির মতো অংশটি যখন স্থানচ্যুত হয়ে পার্শ্ববর্তী নার্ভ বা স্নায়ুতে চাপ দেয় তখনই ব্যথা পায়ের নিচ পর্যন্ত চলে আসে, এটিই ডিস্ক প্রলাপ্স।
কিভাবে বুঝবেন আপনার ডিস্ক প্রলাপ্স হয়েছে
# ভারি জিনিস তুলতে গিয়ে বা হাঁচি-কাশি দিতে গিয়ে কোমরে কোন শব্দ বা টান লাগছে অনুভূত হলে।
# কোমরের অসহ্য ব্যথা পায়ে ছাড়িয়ে গেলে।
# হাঁটলে বা কাজ করলে ব্যথা বেশ বেড়ে যায়।
# অনেক সময় রোগী পায়ে ঝিনঝিন, অবস ভাব ও দুর্বলতা অনুভব করেন।
# কোনও কোনও রোগীর কোমর একদিকে বেঁকে যায়।
ডিস্ক প্রলাপ্স হলে কী করবেন
# সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে এবং শক্ত বিছানা ব্যবহার করতে হয়।
# এ সময় ভারি জিনিস উত্তোলন নিষেধ এবং অন্যান্য শারীরিক ব্যায়াম অবশ্যই বন্ধ থাকবে।
# এ অবস্থায় অবশ্যই নরম খাবার খেতে হবে যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়।
# বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং ফিজিওথেরাপিস্টের সঙ্গে অতিসত্বর যোগাযোগ করতে হবে।
ডিস্ক প্রলাপ্সে ম্যানুপুলেশন থেরাপি
গবেষণায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ ডিস্ক প্রলাপ্সের রোগী ফিজিওথেরাপি নিয়ে ভালো আছেন। তবে বুঝতে হবে কী ধরনের ফিজিওথেরাপি দরকার। কোমর ব্যথা বা ডিস্কের সমস্যার সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে ম্যানুয়াল ও ম্যানুপুলেশন থেরাপি। এ থেরাপি দ্বারা রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। বিশ্বব্যাপী অপারেশনের বিকল্প হিসেবে এ ম্যানুয়াল ও ম্যানুপুলেশন থেরাপি বেশ জনপ্রিয়।
যেভাবে থেরাপি কাজ করে:
ম্যানুয়াল থেরাপি
যে অবস্থানে রোগীর ব্যথা কম থাকে সে অবস্থানে রোগীর অবস্থান পরিবর্তন করা হবে। একেই বলে সেন্ট্রালাইজেশন বা ব্যথা কেন্দ্রীভূতকরণ। অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে রোগীকে পর্যালোচনা করে শুধু একটি মুভমেন্ট নির্বাচন করতে হবে যে মুভমেন্টটি রোগীর সমস্যাটিকে অর্থাৎ ডিস্কের অবস্থানটাকে সঠিক করে। ফলে ব্যথা কমে যায়। এভাবে রোগী যদি ১০-১৫ দিন প্রতিদিন ৪-৫ বার করে তাহলে ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে এবং রোগী সাধারণ কাজে ফিরে যেতে পারবে। এ পদ্ধতির নাম ম্যাকেঞ্জি।
ম্যানুপুলেশন
এ প্রক্রিয়াটিও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। রোগীকে প্রথমে ব্যথাযুক্ত পাশকে ওপরের দিকে রেখে শোয়াতে হবে এবং রোটেশন করে ওপরের পা ভাঁজ অবস্থায় থ্রাস্ট বা জোড়ে চাপ দিতে হবে, যাতে জেলির মতো অংশটি সঠিক জায়গায় এসে পড়ে। ফলে নার্ভের ওপর চাপ কমবে এবং ব্যথা সঙ্গে সঙ্গে চলে যাবে।
# ডা. মো. শাহাদৎ হোসেন : প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড কন্সালটেন্ট, ফিজিওথেরাপি ফাউন্ডেশন
কন্সালটেন্ট-পুপলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, ধানমন্ডি-২, ঢাকা।