দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই বছরের জুনে অনুষ্ঠিত ক্যামব্রিজ পরীক্ষা সিরিজে অসাধারণ অ্যাকাডেমিক নৈপুণ্যের জন্য কেমব্রিজ অ্যাসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের (কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল) ‘টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ পুরস্কার পেলো বাংলাদেশের ৯ জন কৃতি শিক্ষার্থী।
এই উপলক্ষে ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দেশব্যাপী স্কুল শিক্ষার্থীদের অসাধারণ অ্যাকাডেমিক কৃতিত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল, বাংলাদেশ।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অসাধারণ কৃতিত্বের ফল হিসেবে ৯০টি কেমব্রিজ লার্নার্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল। ৪০টিরও বেশি দেশের সেরা শিক্ষার্থীরা এই বৈশ্বিক অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানও এই স্বীকৃতিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করে।
প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের কোর্স পড়াশোনা করে। কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল গত ১৬০ বছর ধরে আন্তর্জাতিকভাবে এই পরীক্ষার আয়োজন করে আসছে।
কেমব্রিজ পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্যের জন্য বাংলাদেশের ৭১ জন শিক্ষার্থী সম্মানসূচক ক্যামব্রিজ লার্নার্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। ৪টি ক্যাটাগরিতে এই অ্যাওয়ার্ডগুলো দেয়া হয়; যথা: টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড, টপ ইন কান্ট্রি, হাই অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড এবং বেস্ট অ্যাক্রোস। যার মধ্যে নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করতে সক্ষম হওয়ায় বাংলাদেশের ৯ শিক্ষার্থী টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড পুরস্কার অর্জন করে। বিজয়ী ৯ জনের মধ্যে ৭ জনই গণিতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য এই স্বীকৃতি লাভ করে। কেমব্রিজ আইজিসিএসই, কেমব্রিজ ‘ও’ লেভেল, কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এএস ও ‘এ’ লেভেল কোয়ালিফিকেশনের আলাদা আলাদা বিষয়ে এই পুরস্কার অর্জন করে শিক্ষার্থীরা।
এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- ব্রিটিশ কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর ডেভিড নক্স, কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের টিচিং অ্যান্ড লার্নিং ডিরেক্টর লি ডেভিস, ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক্সাম অপারেশনসের ডিরেক্টর জুনায়েদ আহমেদ ও কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ম্যানেজার শাহীন রেজা।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, “অসাধারণ ফলাফলের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত সবাইকে আমার অভিনন্দন। এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। কেমব্রিজ পরীক্ষায় তোমাদের অর্জন কঠোর পরিশ্রম ও বৈশ্বিক পর্যায়ে তোমরা যে প্রতিযোগিতা করতে পারো- তারই প্রমাণ। সবাইকে আবারও অভিনন্দন। আমার বিশ্বাস, কেমব্রিজ পরীক্ষায় এ অর্জনের মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে কেও কেও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে ও ভবিষ্যতে বৈশ্বিক পর্যায়ে অবদান রাখতে পারবে। তবে একটি বিষয় আমি তোমাদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে, ৩০ লাখ শহীদের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাই মাতৃভূমির প্রতি তোমাদের যে দায়িত্ব রয়েছে, সেটা অবশ্যই ভুলে গেলে চলবে না। তোমাদের সবসময় গর্বিত হওয়া উচিত। আজকের অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য কেমব্রিজ এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলকে ধন্যবাদ। অসাধারণ ফলাফল অর্জন করা সকল বিজয়ীদেরকে আবারও অভিনন্দন।”
বাংলাদেশ নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, “কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন আউটস্ট্যান্ডিং লার্নারস’ অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত থাকতে পারা আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দদায়ক। শিক্ষার্থীরা বৈশ্বিকভাবে সেরার স্বীকৃতি অর্জন করেছে, এটা প্রত্যক্ষ করাও উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়। এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশেও মেধাবী শিক্ষার্থীরা রয়েছে ও তাদের সফলতা অর্জনের প্রচেষ্টা রয়েছে। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষা-সংস্কৃতি ও অর্থনীতি-বাণিজ্য সহ সকল ক্ষেত্রে ও ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাজ্যে ৬ লাখের বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন, যারা সমাজের উন্নতিতে অবদান রেখে চলেছেন। আমি মনে করি, এক্ষেত্রে শিক্ষা সবকিছুর মূলে রয়েছে। তারপর, তোমরা যখন তোমাদের জীবন গড়া ও শিক্ষা অর্জনের পরবর্তী পদক্ষপ নিয়ে ভাববে, আমার প্রত্যাশা তোমরা এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যকে বিবেচনা করবে। কেনোনা, হাই কমিশনার হিসেবে হিসেবে আমি সবচেয়ে আনন্দিত কারণ এ সময়ে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।”
বিষয়টি নিয়ে কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের টিচিং অ্যান্ড লার্নিং ডিরেক্টর লি ডেভিস বলেন, “আমরা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অসাধারণ প্রচেষ্টার জন্য শুভেচ্ছা জানাই। তাদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে আমরা সকলেই আনন্দিত। এসটিইএম বিষয়গুলোতে ভালো করা ছাড়াও, শিক্ষার্থীরা হিসাব বিজ্ঞান, ইংরেজি, আর্ট এবং ডিজাইন বিষয়ে অত্যন্ত ভালো করেছে।”
তিনি আরও বলেন যে, “শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী, দায়িত্বশীল, উদ্ভাবনী এবং চিন্তাশীল করে গড়ে তুলে মেধার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে স্কুলগুলোকে সহায়তা দিয়ে থাকে কেমব্রিজ এডুকেশন। তাছাড়াও, শিক্ষার্থীদের জ্ঞান এবং সাফল্য অর্জনে সহায়তা করায় আমরা সকল শিক্ষক এবং অভিভাবককে ধন্যবাদ দিতে চাই।” খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।
Bengali 
English