দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জীবাণু শুধু অপকারই করে না, উপকারও করে। মানুষের খাদ্যনালিতে থাকে এইসব কোটি কোটি উপকারী ব্যাক্টেরিয়া, ফাঙ্গাস, প্রটোজোয়া। যা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়, ‘গাট মাইক্রোবায়োম’। তাই স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দরকার উপকারী জীবাণু।
মানব শরীরে যেমন ক্ষতিকর জীবাণু রয়েছে, ঠিক তেমনি রয়েছে ভালো জীবাণুও। উপকারী জীবাণুদের সংখ্যা এবং বৈচিত্র বাড়লে আমরা ভালো থাকি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও তখন বাড়ে। পেটের গোলমাল তখন কম হয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ওজনও বশে থাকে। বর্তমানে অতিরিক্ত ওজন ঝরিয়ে ফেলতে অনেকেই খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম বিধি-নিষেধও মেনে চলেন। তবে অনেক সময়ই দেখা যায় যে, হাজার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ওজন কমে না কোনো কিছুতেই। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পেটের সেই উপকারী জীবাণুগুলোর সংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে হাজার চেষ্টা করলেও স্বাস্থ্যের হাল ফিনতে চাই না।
সাম্প্রতিক কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত একটি কলেজের কয়েক জন চিকিৎসকের করা এক গবেষণা বলছে, পেটে থাকা কিছু ‘ফিলমেন্টাস ব্যাক্টেরিয়া’ ধ্বংস হয়ে যায় অতিরিক্ত চিনি খেলে। কাজেই অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া অবশ্যই কমিয়ে ফেলতে হবে। ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার বন্ধ করে, খান ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার। অর্থাৎ চিনি, মিষ্টি, -চিপস-কাটলেট, লুচি-পরোটা বা প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। চিজ-ডিমের কুসুম-তেল-ঘি-মাখনে রাশ টানতে হবে। এর পরিবর্তে খান শাক-সবজি-ফল, বাদাম, বীজ ইত্যাদি।
অন্ত্রে সরাসরি ভালো জীবাণুর জোগান দিতে টক দই খেতে হবে নিয়ম করে। এছাড়াও ইয়োগার্ট, কেফির নামে এক ধরনের ঘোল, কম্বুচা নামে এক ধরনের গেঁজানো সবুজ পানীয়ও খেতে পারেন। ল্যাকটিক অ্যাসিডে গেঁজানো বাঁধাকপিও খান অনেকেই। একে সটেক্র্যাটও বলে। তবে সব খাবার তো সবার সহ্যই হয় না, তাই যে কোনও খাবার প্রতিদিন খাওয়ার আগে এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কখনও ঘুমের অনিয়ম করবেন না। মাত্র দু’সপ্তাহ ঘুম অপর্যাপ্ত হলে অন্ত্রে জীবাণুর ভারসাম্যে বড় রকমের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। এছাড়া অনিদ্রা শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও বিগড়ে দেয়। বাড়িয়ে দিতে পারে মানসিক চাপ, ডায়াবেটিস এবং স্থূলতার ঝুঁকিও।
কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক খেলে অন্ত্রে ভালো-মন্দ সব জীবাণুই মরে পারে দলে দলে। অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মুড়ি-মুড়কির মতো এই ওষুধ খেয়ে থাকেন। এতে অন্ত্রের উপকারী জীবাণুর ক্ষতি হতে পারে। প্রতিরোধ ক্ষমতাও তখন কমতে শুরু করে। আর তখন হজমের সমস্যাও প্রবল হয়ে ওঠে। যে কারণে ওজন কমানো বা বাড়ানো, দুই ক্ষেত্রেই সমস্যাও হতে পারে। তাই এগুলো থেকে সাবধান হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।