দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নানা ভাবে পরিশ্রম করলেও অনেক সময় দেখা যায়, বাহুমূল ও পিঠে মেদ জমে। আর এই মেদ খুব সহজে কমতে চায় না।

বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে বাহুমূল ও পিঠের এই মেদ না ঝরাতে পেরে মনঃকষ্টে ভোগা, আত্মবিশ্বাস হারানোর মতো সমস্যাও দেখা দিতে পার। এই সমস্যার সমাধান করতে পারে ব্যায়াম এবং জীবনধারায় কিছু বদল আনার মাধ্যমে।
ব্যায়াম
সাধারণ বাহুমূল, পিঠ এবং কাঁধের কাছে যে মেদ জমে, তা কমানোর জন্য কিছু বিশেষ ধরনের ব্যায়াম রয়েছে। একজন বিশেষজ্ঞের মতে, এই ক্ষেত্রে ‘স্পট রিডাকশন’ ব্যায়াম সবচেয়ে উপকারী একটি ব্যায়াম। শরীরের কোনও নির্দিষ্ট অংশের মেদ ঝরানোর জন্য যে নির্দিষ্ট ব্যায়াম করা হয়ে থাকে, সেগুলোকেই ‘স্পট রিডাকশন’ ব্যায়াম বলা হয়। বাহুমূল, হাত এবং পিঠের অতিরিক্ত মেদ ঝরানোর জন্য রয়েছে এমন কিছু ব্যায়াম সম্পর্কে আজ জেনে নিন।
আর্ম সার্কলিং
আপনি প্রথমেই একটি চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। তারপর হাত দু’টি দু’পাশে কাঁধ বরাবর টান টান ভাবে তুলুন। এখন এক সঙ্গে দু’টি হাত ঘড়ির কাঁটার দিকে ১৬ বার ঘোরান। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে আবারও ঘোরান ১৬ বার। এই ব্যায়ামটি দু’-তিন বার করতে পারেন।
পেক ডেক
আপনি প্রথমেই হাতের মুঠো বন্ধ করুন। হাত দু’টি ভাঁজ করে তারপর মুখের সামনে সোজাসুজি রাখুন। ওই অবস্থাতেই হাত দু’টি দু’পাশ দিয়ে পিছনের দিকে নিয়ে যান। এই অবস্থায় ১০ পর্যন্ত গুনুন। এরপর হাত দু’টি আবার সামনের দিকে নিয়ে আসুন। এভাবে ৪/৫ বার ব্যায়ামটি করা প্রয়োজন।
পুলিং অব আর্মস ব্যাকওয়ার্ডস
আপনি প্রথমেই সোজা হয়ে চেয়ারে বসুন। তারপর টানটান করে একটি হাত মুঠো করে উপরের দিকে তুলুন। এখন, হাতে হালকা চাপ পড়বে, এমনভাবে সেটিকে টানটান করে পিছন দিকে ঠেলার চেষ্টাও করতে হবে। এই অবস্থাতে ১০ পর্যন্ত গুনুন। দু’হাতে ৪ বার করে এই ব্যায়ামটি করা যেতে পারে। সৌমেনের মতে, বাহুমূলের মেদ ঝরাতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ব্যায়ামগুলোর মধ্যে এটিও একটি।
ডাউনওয়ার্ড ফেসিং ডগ
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দু’টি টানটান করে উপরের দিকে তুলে ধীরে ধীরে নামিয়ে ফেলে মাটিতে ভর দিন। এই অবস্থায় শরীরটি ত্রিভুজের মতোই দেখাবে। এখন ওই অবস্থাতেই কোমরটি কিছুটা নীচের দিকে ঠেলুন। ব্যায়ামটি করার সময় ১০ পর্যন্ত গুনার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। দিনে ৪-৫ বার করা যায় এই ব্যায়ামটি।
পুশ আপ
পুশ আপ ব্যায়ামটি নানা কারণে ভীষণ পরিচিত। ব্যায়ামটি হাত এবং বাহুমূলের সঙ্গে সঙ্গে পুরো শরীরেরই মেদ ঝরাতে কাজে লাগে এটি। ব্যায়ামটি করার জন্য প্রথমেই উপুড় হয়ে শুতে হবে ম্যাট কিংবা কোনও শক্ত জায়গার উপর। এরপর পা দু’টির মধ্যে কিছুটা দূরত্ব রাখতে হবে। শরীরকে টানটান রেখে হাত এবং পায়ের আঙুলের উপরে ভর দিয়ে সেটি তুলতে হবে কিছুটা। মনে রাখতে হবে, শরীরের ভার যেনো হাতের উপরেই বেশি পড়ে। ব্যায়ামটি করার সময় ৮ পর্যন্ত গুনতে হবে। দিনে ৩-৪ বার ব্যায়ামটি করা যেতে পারে।
তাছাড়াও হাতের মেদ এবং সার্বিক ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্ডিয়ো, বেঞ্চ ডিপসের মতো কিছু ব্যায়ামও করতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org