দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একের পর এক বৃষ্টি আর বৃষ্টি। এই বর্ষায় বৃষ্টির কারণে হাঁটতে যাওয়ার সুযোগই হয় না, বৃষ্টি না হলেও চারদিকে কাদাপানির কারণে অনেকেই বর্ষায় বাইরে হাঁটতেই যান না। তাহলে হাঁটাহাঁটি হবে কীভাবে?
শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা, ওজন কমানো- চিকিৎসকদের মতে, সব সমস্যার একটাই সমাধান হলো হাঁটা। সুস্থ থাকতে হাঁটার কোনও বিকল্প নেই। তবে ঠিক কীভাবে কতোক্ষণ হাঁটলে কতোটা উপকার পাবেন? ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ওজন কমানোর জন্য কতোক্ষণ হাঁটাটা জরুরি? বলা হয়ে থাকে, দিনে দশ হাজার পা হাঁটাই আদতে সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি।
তা হলে কীভাবে চাঙ্গা থাকবে শরীর? হাঁটাহাঁটিও বা হবে কীভাবে?
# অফিস থেকে বাড়ি ফিরেই অনেকেই টিভি কিংবা ওয়েব সিরিজ় দেখতে শুরু করে দেন। কেও আবার সোফায় বসে, কেও আবার বিছানায় শুয়ে সিরিজ় উপভোগ করে থাকেন। শরীর চাঙ্গা রাখতে হলে টিভিতে সিরিজ় বা সিনেমা দেখতে বাড়িতেও হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।
# আপনি কী বলিউডের গান শুনতে বেশি ভালোবাসেন? তাহলে মোবাইল বা টিভিতে গান চালিয়ে তার সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে মনের আনন্দে ঘণ্টাখানেক নাচ করতে পারেন। চেষ্টা করুন দ্রুত লয়ের গান বাছাই করতে। নাচ করলে হাঁটার তুলনায় আরও বেশি ক্যালোরি খরচ হতে পারে। জুম্বাতে মিশে রয়েছে রাম্বা, সালসা এবং হিপহপের মতো নৃত্যশৈলী। শুধু শিল্পকলা হিসাবে নয়, শরীরচর্চার উপায় হিসাবেও এই নাচ বেশ ভালো উপযোগী। জুম্বা নাচলে ঝরঝরে থাকে হাত, পা এবং পেটের পেশি।
# দিনের অনেকটা সময় আমরা ফোনেই কথা বলি। বান্ধবীর সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলার সময় হোক বা অফিসের কোন ‘কনফারেন্স কল’ চলাকালীনই হোক- এক জায়গায় বসে কথা না বলে চেষ্টা করুন হাঁটাহাঁটি করে কথা বলার।
# বর্তমান সময়ে আমরা অনেক বেশি যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়েছি। বাড়ির কাজের জন্য না হয় কোনও যন্ত্রের উপর আমাদের নির্ভর করতেই হয়, না হলে আবার পারিশ্রমিক দিয়ে পরিচারিকা রাখা হয়। বর্ষায় হাঁটাহাঁটির সুযোগও কম। তাই সব কাজ না হলেও চেষ্টা করুন অন্তত ঘরের আসবাবপত্র নিজে নিজেই মুছতে। এতেও বেশ খানিকটা হাঁটাহাঁটির সুযোগ হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org