দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইউক্রেনের আঞ্চলিক সামরিক দপ্তরগুলোতে নিরীক্ষা চালানোর পর ঘুষ গ্রহণ ও মানব পাচারের মতো বিভিন্ন দুর্নীতি প্রকাশ পেয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধের সময় ঘুষ গ্রহণ বড় ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।
জানা যায়, দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযানে সামরিক নিয়োগের দায়িত্বে থাকা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সব আঞ্চলিক কর্মকর্তা ইতিমধ্যেই পদচ্যুত হয়েছেন। খবর: বিবিসি ও রয়টার্সের।
৩০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা এই ফৌজদারি অভিযোগের মোকাবেলা করছেন বলে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিশ্চিত করেন। সামরিক নিয়োগের দায়িত্বে থাকা সব আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে সরানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেছেন, যুদ্ধের সময় ঘুষ গ্রহণ বড় ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা-আক্রমণ চলার এই সময়টিতে সশস্ত্র বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে চাইছে দেশটি, সে কারণেই এই শুদ্ধি অভিযান চালানো হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগ মূলত ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ, এটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে আস্থাও নষ্ট করে।
পদচ্যুত কর্মকর্তাদের স্থলে যুদ্ধক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং গোয়েন্দা সংস্থা যাচাইকৃত প্রার্থীদের নতুন কর্মকর্তা হিসেবে বেছে নেওয়া হবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, অভিযোগের মধ্যে রয়েছে যে, কর্মকর্তারা ঘুষ হিসেবে নগদ অর্থ এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণ করেছেন অথবা লড়াইয়ে অংশ নেওয়ার জন্য ডাক পাওয়া যোগ্য লোকজনকে ইউক্রেইন ছাড়তে সহায়তাও করেছেন।
উল্লেখ্য, লড়াই করতে সক্ষম ইউক্রেনের এমন ১৮ কিংবা তার বেশি বয়সী সব পুরুষদের বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ও ৬০ বছরের কম বয়সী সব পুরুষের দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org