দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলো আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট)। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় এই পরীক্ষা।
দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে এই পরীক্ষা। এ বছর ১ হাজার ৩৮৪টি কেন্দ্রে ১০ লাখ ৭ হাজার ২৪১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া ৮টি বিদেশ কেন্দ্রে ৩২৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
এই বছর একটি বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর এবং পূর্ণ সময় পরীক্ষা হবে। শুধু আইসিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
অপরদিকে, সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর তেজগাঁও কলেজকেন্দ্র পরিদর্শন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সংক্ষিপ্ত ব্রিফও করবেন।
অপরদিকে প্রশ্নফাঁস এবং নকলমুক্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্ব স্ব শিক্ষা বোর্ড। এর মধ্যে অন্যতম হলো কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা। গত ১৪ আগস্ট থেকে সারাদেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখা হবে।
আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর কথা ছিরো। এই পরীক্ষা অংশ নিতে মোট ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন পরীক্ষার্থী ফরমও পূরণ করেন।
কিন্তু বন্যার কারণে চট্টগ্রাম, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৪টি বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ায় আগামী ২৭ আগস্ট এই তিন বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হবে। সাধারণ বোর্ডের মধ্যে চট্টগ্রাম বোর্ডে এবার পরীক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৩ জন এবং কেন্দ্র ১৫১টি।
এইচএসসি পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থী, পরিদর্শক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রবেশ ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই হলের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে।
অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময় কিংবা পরীক্ষা শুরুর পর (১০টা ৩০ মিনিটের বেশি নয়) প্রবেশ করেন, তাহলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্বের কারণ রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই শিক্ষা বোর্ডকে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।
কেন্দ্রের কর্মকর্তা এবং পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শকদেরও কিছু নিয়ম মেনে চলতে বলা হয়েছে। সেগুলো হলো- পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে কেন্দ্রসচিবকে প্রশ্নের সেট কোড জানিয়ে দেবেন শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেওই মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রিক কোনো ডিভাইস নিয়ে কোনো কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও ছবি তোলা যায় না- ঠিক এমন মোবাইল ব্যবহার করতে হবে।
অপরদিকে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যেমন- পরীক্ষার্থী, কক্ষ পর্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়া কেওই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। সেইসঙ্গে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org