দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপিতে ১০ বছর বয়সী এক ছেলেকে মায়ের গাড়ির পেছনে প্রস্রাব করার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে গত ১০ আগস্ট। ঘটনার সময় ওই শিশুটির মা লাটোনিয়া ইসন তার আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে যান।
নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওইসময় পুলিশ লাটোনিয়াকে বলে যে, আমি আপনার ছেলেকে আপনার গাড়ির পিছনে প্রস্রাব করতে দেখেছি। এভাবে জনসমক্ষে প্রস্রাব করার জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শিশুটির মা বলেছেন, পুলিশ এই ঘটনাকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসায় শিশুটি ট্রমাটাইজও হয়ে যেতে পারে। সে এর জন্য মানসিক চাপেও থাকবে।
স্থানীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই মহিলা বলেছেন, ছেলেকে তিনি গাড়ির পেছনে প্রস্রাব করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তখন সে বলে যে, ‘আমার বোন আমাকে বলেছিল এখানে কোনো টয়লেটই নেই’। পরে আমি তাকে বলেছিলাম যে, এখানে কোনো বিশ্রামাগার রয়েছে কিনা সেটিও আমার কাছ থেকে জেনে নেওয়া উচিত ছিল তোমার।
গ্রেফতার হওয়া শিশুটির নাম কোয়ান্টাভিস ইসন। পুলিশ তার মাকে বলেছিল যে, কোয়ান্টাভিস চাইলেই গাড়িতে ফিরে যেতে পারে এবং তাকে শুধু একটু সতর্ক করে দিবেন। তবে কয়েকজন অফিসার শিশুটিকে জেলে নিয়ে যাওয়া দরকার বলেও মন্তব্য করেন।
এই কথা শুনে শিশুর মা বলেন যে, অবশ্যই পার্কিং লটে তার প্রস্রাব করা মোটেও ঠিক হয়নি। আমি তাকে সেটি বুঝিয়েছি এবং শাসন করেছি। একজন অফিসার তাকে আমার সঙ্গে গাড়িতে চলে আসার কথা বলেছিলেন তাও ঠিক আছে। তবে বাকিদের কথা শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। তারা কিভাবে ১০ বছরের শিশুকে টেনে জেলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতে পারলেন!
শিশুটির মতে, সে পুলিশের এমন আচরণ দেখে- ভয় পেয়ে গেছেন। যখন পুলিশ তাকে গাড়ি থেকে নামাতে আসে তখন সে কান্না শুরু করে দেয়।
নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে যে, ছেলেটিকে শেষ পর্যন্ত জেলেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং পরে তার মায়ের সঙ্গে আবার ফেরত পাঠানো হয়।
এদিকে সেনাটোবিয়ার পুলিশ প্রধান রিচার্ড চ্যান্ডলার রাজ্যের যুব আদালত আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন যে, আইন প্রয়োগকারীরা ৭ বছরের কম বয়সী শিশুদের রিপোর্ট করতে পারে যদি তাদের তত্ত্বাবধানের কোনো প্রয়োজন হয়। কিংবা ১০ বছর বয়সী কেও যদি এমন কোনো কাজ করে যা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যেও বেআইনি তাহলে তার বিরুদ্ধেও রিপোর্ট করা যাবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org