দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মূলত নীল তিমিকেই পৃথিবীর সর্বকালের সবচেয়ে বড় প্রাণী হিসেবে জানি আমরা। এবার নতুন খবর হলো তবে সর্বকালের সবচেয়ে বড় প্রাণীর তকমা বদলে যেতে পারে। রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে তারই স্বজাতি দৈত্যাকার ‘পেরুসেটাস’ তিমি!
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পৃথিবীতে এই পর্যন্ত যতো প্রাণী এসেছে তারমধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাণী হলো এই নীল তিমি। প্রাপ্তবয়স্ক একটি নীল তিমির গড় ওজন প্রায় ১৫০ টনের মতো। এরা দৈর্ঘ্যে ১০০ ফুটের মতো হয়ে থাকে।
তবে সর্বকালের সবচেয়ে বড় প্রাণীর তকমা এবার বদলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে তারই স্বজাতি দৈত্যাকার ‘পেরুসেটাস’ তিমি। এই তিমিটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং ভারি প্রাণী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে যে, পেরুসেটাসের ওজন গড় ১৮০ টন।
জুলাই মাসে নেচার জার্নালে পেরুসেটাস কলোসাস কিংবা ‘পেরু থেকে আসা বিশাল তিমি’ নামে নতুন প্রজাতির এই তিমির বর্ণনা উঠে এসেছে।
ধারণা করা হচ্ছে যে, এই তিমি প্রায় ৩৮ থেকে ৪০ মিলিয়ন বছর আগে ইওসিন যুগে বসবাস করতো। ওজনের দিক থেকেও এরা নীল তিমি বা বৃহত্তম ডাইনোসরসহ অন্য যে কোন প্রাণীকে ছাড়িয়ে যাবে তাতে সন্দেহ নেই।
নেচার জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণার প্রধান লেখক ইতালির পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিজ্ঞানী জিওভান্নি বিয়ানুচি বলেছেন, এই প্রাণীর প্রধান বৈশিষ্ট্যই হলো বেশি ওজন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, আসলে বিবর্তন এমন প্রাণী তৈরি করতে পারে- যা আমাদের কল্পনারও বাইরে।
পেরুসেটাসের আংশিক কঙ্কালটি এক দশকেরও বেশি সময় পূর্বে আবিষ্কার করেন সান মার্কোস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ইতিহাস যাদুঘরের মারিও উরবিনা।
পেরুর ইকা মরুভূমির খাড়া একটি পাথুরে ঢালের পাশেই একটি আন্তর্জাতিক দল বছরের পর বছর ধরেই খনন করেছে। পেরুর এই অঞ্চলটি একসময় পানির নিচে ছিল ও এটি তার সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবাশ্মের জন্যও পরিচিত। পেরুসেটাস তিমির মেরুদণ্ড হতে ১৩টি কশেরুকা, ৪টি পাঁজর ও একটি নিতম্বের হাড় পাওয়া গিয়েছিলো। হাড়গুলো অস্বাভাবিক বড় এবং অত্যন্ত ঘন।
এই বিষয়ে গবেষকরা বলেছেন, এই অতি ঘন হাড়গুলো ইঙ্গিত দেয় যে, তিমিটি অগভীর উপকূলীয় পানিতে বসবাস করতো। তবে তিমিটির দাঁতের কোনো অংশই পাওয়া যায়নি, যে কারণে এর জীবনযাত্রার ব্যাখ্যা পাওয়া প্রায় কঠিন হয়ে উঠেছে।
আধুনিক সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী ব্যবহার করার মাধ্যমে তিমিটির আকার এবং ওজন নির্ণয়ের জন্য একটি থ্রিডি কঙ্কাল ব্যবহার করা হয়েছে। এ থেকেই ধারণা করা যাচ্ছে যে, প্রাচীন প্রাণীটির ওজন ৯৪ হতে ৩৭৫ টনের মধ্যেই ছিল। অথচ সবচেয়ে বড় নীল তিমিগুলো প্রায় ২০০ টন ওজনের হয়ে থাকে।
নর্থইস্ট ওহিও মেডিকেল ইউনিভার্সিটির জীবাশ্মবিজ্ঞানী হান্স থিউসেন বলেছেন যে, এমন একটি দৈত্যাকার প্রাণীকে দেখতে পারাটা খুব রোমাঞ্চকর হবে। তথ্যসূত্র : এপি, আলজাজিরা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org