দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য ও ফিটনেসের জন্য অনেকেই স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করেন। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন, এটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর একটি বিষয।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাপল ওয়াচ, ফিটবিট, ফাস্ট্র্যাক, হাইফিউচার, অ্যামাজফিট, ডিজো ও রিষ্টব্যান্ডস-এর মতো স্মার্টওয়াচগুলোতে লক্ষ লক্ষ বিপদজনক ব্যাকটেরিয়া জমে থাকে। যে ব্যাকটেরিয়াগুলোর জন্য ব্যবহারকারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যে কারণে প্রায়ই তাদের ভুগতে হয় জ্বর বা ডায়রিয়ার মতো নানা অসুখে।
ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় পৃথক পৃথক স্মার্টওয়াচ এবং রিস্টব্যান্ড ম্যাটেরিয়াল যেমন- প্লাস্টিক, রাবার, চামড়া, কাপড়, সোনা এবং রুপার মতো দ্রব্যগুলো পরীক্ষা করা হয়। ওই গবেষণায় জানা যায়, প্রায় সব ধরনের উপাদানই মানুষের জন্য বিপদজনকও হতে পারে। এতে প্রায় ৯৫ শতাংশ বিপদজনক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়।
গবেষণায় অ্যাপল ও ফিটবিট ব্র্যান্ডের ডিভাইসের উপর বেশি নজর দেওয়া হয়। দেখা গেছে যে, এই ব্র্যান্ডগুলোর প্রায় প্রত্যেকটি রিস্টব্যান্ড ও স্মার্টওয়াচ ৯৫ শতাংশই বিপদজনক ব্যাকটেরিয়া বহন করে থাকে। যারমধ্যে, ৮৫ শতাংশ স্টাফিলোকক্কাস এসপিপি ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়, যা খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এছাড়াও, ৬০ শতাংশ কোলাই ব্যাকটেরিয়া ও ৩০ শতাংশ সিউডোমোনাস এসপিপি ব্যাকটেরিয়াও পাওয়া যায়।
ব্যবহার করুন স্যানিটাইজার
গবেষণায় দেখা যায়, যে সমস্ত ব্যবহারকারীরা প্রায়শই ব্যায়াম করার জন্য জিমে যান তাদের স্মার্টওয়াচ কিংবা রিস্টব্যান্ডে সবথেকে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে। সে কারণে তাদের ওয়ার্কআউটের সময় ব্যবহার করা প্রত্যেকটি জিনিসের সঙ্গে স্মার্টওয়াচ কিংবা রিস্টব্যান্ড স্যানিটাইজ করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কোন উপাদান দিয়ে তৈরি স্মার্টওয়াচ বা রিস্ট ব্যান্ডে কম ব্যাকটেরিয়া
গবেষকরা মনে করেন, প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি রিস্টব্যান্ড এবং স্মার্টওয়াচেই সব থেকে বেশি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে থাকে। তবে সেই তুলনায় আবার সোনা কিংবা রুপোর তৈরি ব্যান্ডে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি অনেক কম হয়।
বর্তমান যুগে স্মার্টফোনের মতো স্মার্টওয়াচও কিছু কিছু ব্যবহারকারীর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে একটি এবং অন্যতম হয়ে উঠেছে। তাই স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করা বন্ধ করতে না পারলেও, ডিভাইসগুলোতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমানোর জন্য স্মার্টওয়াচ কিংবা রিষ্টব্যান্ডসগুলোকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্যানিটাইজ করে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org