দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্মার্টফোনের ছোট একটি সংস্করণই হলো মূলত স্মার্টওয়াচ। অপরদিকে ফিটনেস ব্যান্ডের কাজও প্রায় একইরকম। তবে কোনটি কার জন্য ভালো?
আপনি সারাদিনে কত পা হাঁটলেন, হৃত্স্পন্দনের হার কেমন ও রক্তে অক্সিজেনের মাত্রায় বা কতো! এই কয়েকটি বিষয়। স্মার্ট ওয়াচই বলুন বা ফিটনেস ব্যান্ড- দু’টির কাজ তো প্রায় একইরকম। তবে আজকাল তো অনেকেই স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ব্যান্ড একই সঙ্গে পরেন। তাহলে দু’হাতে দু’রকম যন্ত্র রাখার মানেই বা কী?
আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানেনই না যে, স্মার্টফোনের ছোট একটি সংস্করণই হলো আসলে স্মার্টওয়াচ। ভিড়, বাসের মধ্যে পকেট থেকে ফোন বের করার উপায় থাকে না অনেক সময়। তখন এই যন্ত্রটিই একমাত্র ভরসা। স্মার্টওয়াচের মাধ্যমে ফোনে কথা বলা, মেসেজ দেখা, ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামের নোটিফিকেশন সবই করা সম্ভব। আবার অনেকেই মনে করেন যে, ফিটনেস ব্যান্ড শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্যই। উচ্চ রক্তচাপ, হৃত্স্পন্দন থেকে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা- এই সবই মাপা যায় এই যন্ত্রে। সারাদিনে কতো পা হাঁটলেন কিংবা কতোটা শরীরচর্চা করলেন, তা বোঝা যায় ক্যালরি পোড়ার মাত্রা দেখেই।
প্রযুক্তি দিনে দিনে উন্নত হচ্ছে, পৃথক পৃথক যন্ত্রের পিছনে টাকা খরচ করতে চান না অনেকেই। তাই এই দু’টি যন্ত্রের বেশ কিছু ফিচারকে একত্রিত করার চেষ্টা করেন প্রযুক্তিবিদরা। বেশ কিছু সংস্থা সেই চাহিদা পূরণও করে। তবে ব্যবহারের দিক থেকে তা একটু ঝামেলার হতে পারে। ফোনের সঙ্গে ফিটনেস ব্যান্ডের সংযোগ করা খুব একটা সহজ কাজ নয়।
কোন কোন দিক থেকে ফিটনেস ব্যান্ড ও স্মার্টওয়াচ আলাদা?
স্মার্টওয়াচের মধ্যে সবধরনের ফিটনেস ট্র্যাকারও থাকে। যারমধ্যে রয়েছে জিপিএস। প্রত্যেকের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পৃথক করে ক্যালরি মাপার সুবিধা দেওয়া থাকে। এছাড়াও, গানের প্লে লিস্ট, ওয়্যারলেস হেডসেটের জন্য ব্লুটুথ, ফোন ছাড়াই কথা বলার জন্য মাইক সবকিছুই রয়েছে। চাইলে ফোনের সঙ্গে স্মার্টওয়াচ যুক্ত না করলেও স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে সক্ষম এই যন্ত্রটি। স্মার্টওয়াচের দাম একটু হলেও অবশ্য বেশি। ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে স্মার্টওয়াচের দাম ৫০ হাজার কিংবা লক্ষাধিক টাকাও হতে পারে।
তবে ফিটনেস ব্যান্ড ততোটা স্মার্ট নয়। তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য সচেতনদের মধ্যে ফিটনেস ব্যান্ডের চাহিদাও রয়েছে। কারণ হলো, ফিটনেস ব্যান্ডগুলোর ডিসপ্লে স্মার্টওয়াচের থেকে আকারে একটু ছোট। স্মার্টওয়াচের মতো চট করে ব্যাটারি শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। ঘুমোনোর সময়ও এই ধরনের ব্যান্ডগুলো পরে শোয়া যাবে। সর্বোপরি, স্মার্টওয়াচের থেকে ফিটনেস ব্যান্ডের দামও বেশ কম। বাজারে নানা সংস্থার ফিটনেস ব্যান্ড পাওয়া যায়। ২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নানা রকম দামে পাওয়া যায়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org