দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ডেলটা নামে আইফোনের একটি নতুন ইমুলেটর অ্যাপ তৈরি হয়েছে। অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের এই অ্যাপটি এতো জনপ্রিয় কেনো? কারণ এই অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাসিক ওল্ড স্কুল রেট্রো গেম খেলা যায়।
মাত্র ক’দিন আগেই অ্যাপটি অ্যাপল স্টোরে লঞ্চ হয়েছে। এই স্বল্প সময়েই তা জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে এসেছে। আইফোনে এই অ্যাপের মাধ্যমে নিনটেনডোর সেই নস্টালজিক গেমগুলো আবারও খেলা যাচ্ছে!
দীর্ঘদিন ধরেই অ্যাপল স্টোরে যে কোনো ইমুলেটর অ্যাপ নিষিদ্ধ ছিল। তবে সম্প্রতি এই কড়াকড়িতে বদল এলো। ইউরোপিয়ান রেগুলেশন ওথার্ড পার্টি অ্যাপকে অ্যাপল স্টোরে অনুমোদন দেওয়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাপলের কিছু সিদ্ধান্তও রয়েছে। থার্ড পার্টি অ্যাপকে আইফোনে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার পরই এই পরিবর্তন এলো।
ইমুলেটর আসলে কী?
ইমুলেটর মূলত একটি সফটওয়ার। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা হার্ডওয়ারও বলা যায়। এগুলো ভিডিও গেম কনসোলকে অনুকরণ করে বানানো হয়েছে। ভিডিও গেম ইমুলেটর থাকলে রেট্রো নিনটেনডো, সেগা, সনি ও প্লেস্টেশনের গেম খেলা যায় কম্পিউটারে কিংবা স্মার্টফোনে। সঠিক রোম ও আইএসও ফাইল থাকলেই চলে। ব্যবহারকারীরা ভিনটেজ কনসোলের অভিজ্ঞতা পাবেন কোনো ডিভাইস ছাড়া।
একজন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী এমুলেটর ব্যবহার করে সুপার মারিও ল্যান্ড খেলতে পারেন। তিনি শুধুই ফোনের রোম ব্যবহার করছেন। ১৯৯০ ও ২০০০ এর শুরুর দিকে ইমুলেটর অনেক জনপ্রিয়তা পায়। মানুষ বুঝতে পারে যে, দামি কনসোল না পেলেও তারা ক্লাসিক গেম কম্পিউটারে খেলতে পারবেন।
রোম কী?
গেম খেলতে হলে গেমের আসল ফাইল তো লাগবেই। এই ফাইল রিড অনলি মেমরিতেই সংরক্ষিত থাকে যাকে আমরা রোম বলে থাকি। অর্থাৎ ভিডিও গেমটার একটা ডিজিটাল কপি আপনিও পাচ্ছেন। গেম কার্ট্রিজ রোমের চিপে গেমের ডাটা তখন সংরক্ষণ করে। রোম ফাইল বিশেষ হার্ডওয়ার হিসেবেও তখন বিবেচিত হয়। ইমুলেটর একদমই ফ্রি ও অবৈধ কিছু নয়। তবে রোমকে অবশ্য তা বলা যায় না।
ডেলটা কী?
আইফোনে ডেলটা হলো একটা ভিডিও গেম ইমুলেটর। আইফোন সম্প্রতি এটিকে অনুমোদনও দেয়। এই ইমুলেটরে নিন্টেনডো কনসোলের অনেক গেমই খেলা সম্ভব। নিনটেনডো এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেম, নিনটেন’ডো গেম বয়, নিনটেন’ডো এন সিক্সটি ফোর বাদেও আরও অনেক রয়েছে। এই ইমুলেটর অ্যাপটি তৈরি করেছে ডেভেলপার রিলে টেসটুত।
অ্যাপল স্টোর হতে অ্যাপটি সরাসরি ডাউনলোড করা যায়। সাইডলোডিং নিয়ে আপনার আর ভাবতেই হবে না। আইফোনের সঙ্গে সমন্বয় করে এমন অনেক ভালো ফিচার এটিতে যুক্ত করা হয়েছে। এই অ্যাপে থার্ড পার্টি কন্ট্রোলারের সাপোর্টও রয়েছে। কুইক সেভ, চিট কোড এবং গুগল ড্রাইভ বা ড্রপবক্সের সঙ্গে সিংকিং সুবিধাও রয়েছে। ৪ জন খেলোয়াড়ের জন্য লোকাল মাল্টিপ্লেয়ারের সুবিধাও রয়েছে।
কিভাবে ডেলটা কাজ করে
অ্যাপ স্টোর হতে ডাউনলোড করার পরই কোনো গেম পাবেন না। এমনটি সব ইমুলেটরেই হয়ে থাকে। সেজন্য আপনাকে রোম ফাইল নামাতে হবে। সেজন্য আইটুনস ফাইলসের শরণাপন্নও হতে হবে। গুগল ড্রাইভ কিংবা ড্রপবক্স তখন আপনাকে সাহায্য করবে।
রেট্রো গেম টাইটেলের অনেক রোমও পাওয়া যাবে। তবে কপিরাইট ল -এর কথা বিবেচনা করেই নামাতে হবে। রোম ফাইল ডেল্টা অ্যাপ দিয়ে নামিয়ে আপনি গেমও খেলতে পারবেন। রোম লোড হলেই গেমের আর্টওয়ার্ক ডেল্টালাইব্রেরিতেই দেখাবে। এভাবে ব্যবহারকারীরা বুঝতে পারবেন তিনি আসলে কোন গেমটি খেলতে চাইছেন। ডেল্টার নিজস্ব স্কিন ও কন্ট্রোলার থাকায় অভিজ্ঞতাও আরও ভালো হবে। আপনি চাইলেই কিছু ফ্যান মেইড কন্ট্রোলার স্কিন নামাতে পারবেন। খেলার সময় রিয়েল কনসোলের অভিজ্ঞতাও পাবেন। আইওএস নিজেও অনেক ধরনের কনসোলার সাপোর্ট করে।
সমস্যা হলো গেম কনসোলগুলো নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে অ্যাপটি কতোদিন থাকবে তা জানা সম্ভব হয়নি। নিনটেনডো সম্প্রতি এই বিষয়ে কড়াকড়ি করেছে। নিনটেনডোর এই গেমের রমের কপিরাইটও রয়েছে। আবার অনেকেই এর সমালোচনাও করে বসছেন, রেট্রো গেমগুলো অন্তত এভাবে কিছুটা হলেও টিকে রয়েছে। গেমিং ইতিহাসে এটি একটি নতুন ফাইলফলক হতে পারে। তথ্যসূত্র : ইনডিয়ান এক্সপ্রেস।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org