দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা ছোটবেলায় রূপকথার গল্পে শুনেছি রাজহাঁসের সোনার ডিমের কথা। তবে এবার বাস্তব জগতে সোনালী ডিমের মতো বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা!
এই সোনার ডিমের খোঁজ মিলেছে সাগরের তলদেশে। তবে এটি আসলে কী, তা এখনও নিশ্চিত করে কেওই জানেন না। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে সাগরের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মিটার (সাড়ে ৩ কিলোমিটার) নিচে রহস্যময় এই বস্তুটির সন্ধান পাওয়া যায়। গত ৩০ আগস্ট সাগরের তলদেশের জীবজগৎ নিয়ে গবেষণার সময় বিজ্ঞানীদের নজরে আসে এই বস্তুটি। সোনালী রঙের এই ডিম্বাকৃতি-বস্তুটির ব্যাস ৪ ইঞ্চি ও এর গোড়ায় একটি ছোট ফাটলও রয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বস্তুটির সন্ধান পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ)। তারা জানিয়েছেন যে, সাগরের তলদেশে বস্তুটির দিকে ক্যামেরা নিয়ে যাওয়ার সময় এর পরিচয় শনাক্ত করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দ্বিধায় পড়ে যান। প্রথমে দেখে মনে হয়েছিলো এটি কোনো মৃত স্পঞ্জ কিংবা কোরাল। তবে বস্তুটি দেখতে যেনো রূপকথার গল্পের সেই সোনার ডিমের মতোই! তাই এই বস্তুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সোনার ডিম’।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও গুঞ্জন চলছে এই ‘সোনার ডিম’টি নিয়ে। অনেকেই বলেছেন, এটি হয়তো ভিনদেশি কোনো এক প্রাণীর ডিমও হতে পারে! এটি আসলে কী, তা জানতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরাও। তারা এটি সমুদ্রের তলদেশ থেকে জাহাজের পরীক্ষাগারে নিয়ে আসেন। তবে পরীক্ষার পরও এর উৎপত্তি সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কোনো কিছুই জানা যায়নি।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনওএএ’র সাগরে অনুসন্ধান বিষয়ক সমন্বয়ক স্যাম ক্যানডি এই বিষয়ে বলেছেন, বস্তুটির সঙ্গে পরিচিত কোনো প্রাণীর সম্পর্ক রয়েছে কি না তা এখনও জানা যায়নি। সেটি নতুন কোনো প্রাণী বা কোনো প্রাণীর জীবনচক্রের অংশ কিনা তাও এখনও স্পষ্ট নয়।
স্যাম ক্যানডি আরও বলেছেন, এটি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে, পৃথিবী সম্পর্কে আমরা কতোটা কম জানি এবং আমাদের কতোটা জানার আরও বাকি রয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org