দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফাইবার, ভিটামিন বি৬ ও ফোলেটের মতো উপাদানে সমৃদ্ধ ভরপুর এই ঢ্যাঁড়শ। ভিটামিন বি ডায়াবেটিক স্নায়ুর নানা সমস্যা প্রতিহত করতে পারে।
আমরা ‘ঢ্যাঁড়শ’কে তাচ্ছিল্ল করি অনেক সময়। অথচ এই সব্জির গুণ কোনও অংশেই কম নয়। ফাইবার, ভিটামিন বি৬ ও ফোলেটের মতো উপাদানে ভরপুর এই সবজিটি। ভিটামিন বি ডায়বেটিক স্নায়ুর নানা সমস্যাও প্রতিহত করে। সেইসঙ্গে, নিয়ন্ত্রণে রাখে হোমোসিস্টেইনের মাত্রা। এই উপাদানটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধিরও অন্যতম কারণ। ঢ্যাঁড়শে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় এই দুই ধরনের ফাইবারই থাকে। আর ফাইবার পাচনক্রিয়ার গতি কমিয়ে দিতে পারে। যে কারণে খাবার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার পরিমাণও বাড়ে ধীরে। এছাড়াও, ঢ্যাঁড়শে ক্যালোরির মাত্রাও বেশ কম। যে কারণে অনায়াসে খাওয়া যেতে পারে এই ঢ্যাঁড়শ।
নিয়মিত ঢ্যাঁড়শ খেলে কী কী উপকার পাবেন?
পুষ্টিগুণে ভরপুর ঢ্যাঁড়শ
পুষ্টিগুণে ভরপুর ঢ্যাঁড়শে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্যালশিয়ামের মতো জরুরি কিছু উপাদানও, যা শারীরবৃত্তীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস।
হজমে সহায়ক ঢ্যাঁড়শ
দু’ধরনের ফাইবারে সমৃদ্ধ ঢ্যাঁড়শ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় দারুণভাবে কাজ করে। অন্ত্র ভালো ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতেও নিয়মিত ঢ্যাঁড়শ খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ঢ্যাঁড়শ
সহজপাচ্য ফাইবারের পাশাপাশি ঢ্যাঁড়শে আরও রয়েছে পলিফেলনের মতো উপাদান। যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। ছোট থেকে ঢ্যাঁড়শ খাওয়ার অভ্যাস টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমাতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ঢ্যাঁড়শ
ফাইবার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে এই ঢ্যাঁড়শ। ঢ্যাঁড়শে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই নিয়মিত এই সব্জি খেলে হার্টও ভালো থাকে।
দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে ঢ্যাঁড়শ
চোখ ভালো রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন হলো ভিটামিন এ। ঢ্যাঁড়শে এই ভিটামিনটি রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। চোখে বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রুখতেও নিয়মিত ঢ্যাঁড়শ খাওয়া প্রয়োজন রয়েছে।
হাড় মজবুত করে ঢ্যাঁড়শ
হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় দু’টি উপাদানের একটি হলো ক্যালশিয়াম, আর অপরটি হলো ম্যাগনেশিয়াম, যা রয়েছে ঢ্যাঁড়শে। সঙ্গে রয়েছে ভিটামিন সি’ও। তাই অস্টিয়োপোরোসিসের মতো হাড়ের রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই ঢ্যাঁড়শ।
ঢ্যাঁড়শ ত্বকে জেল্লা বজায় রাখে
সাধারণত ঢ্যাঁড়শে যে পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে, তা অন্য সব্জিতে কখনও পাওয়া যাবে না। সঙ্গে রয়েছে ভিটামিন এ ও সি। যা ত্বকের জেল্লা বজায় রাখা ও বয়সজনিত লক্ষণগুলোও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org