দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজায় ইসরাইলের হামলা থামাতে জাতিসংঘের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
আজ স্থানীয় সময় সোমবার (১০ অক্টোবর) এই বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে টেলিফোন করে এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। -খবর বার্তাসংস্থা ওয়াফার।
টেলিফোনে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার জনগণের জন্য চিকিৎসা এবং ত্রাণ সামগ্রী আসার পথ সুগম করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণেরও অনুরোধ জানান মাহমুদ আব্বাস।
যদি দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয় সেইক্ষেত্রে শীঘ্রই গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় শুরু হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
এদিকে মাহমুদ আব্বাসের উৎকণ্ঠার জবাবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জাতিসংঘ গাজা উপত্যকায় জরুরি মানবিক সহায়তা সামগ্রী পাঠানোর জন্য সর্বক্ষণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এছাড়াও বর্তমানে ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ বন্ধেও জাতিসংঘ নিরলসভাবে কাজ করছে বলে আশ্বাস দেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
বর্তমানে গাজায় ইসরাইলি বাহিনী যে হামলা চালাচ্ছে, তা মূলত ইসরাইলে গাজার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ। শনিবার ভোররাতে দক্ষিণ এবং মধ্য ইসরাইলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়া শুরু করে হামাস।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ ও হামাসের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, সূর্যের আলো পুরোপুরি ফোটার আগেই ৫ হাজারেরও বেশি রকেট ছোড়া হয় ইসরাইলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামকির স্থাপনা লক্ষ্য করে।
এছাড়াও হ্যাং গ্লাইডার এবং মোটরচালিত গ্লাইডারে চেপে হামাসের বেশ কয়েকজন যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলের সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমাণ্ড কার্যালয়ে গিয়ে সেনা কর্মকর্তা এবং সদস্যদের বন্দি ও জিম্মি করে ওই কমান্ডের সঙ্গে সেনাবাহিনীর মূল কমান্ড এবং অন্যান্য শাখার কার্যালয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
এই সময় মোটরসাইকেল ও জীপে করে সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে প্রবেশ করেন আরও কয়েক শতাধিক যোদ্ধা।
রয়টার্সের অনুসন্ধানী এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত দুই বছর পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির পর শনিবার এই হামলা চালায় হামাস। এই ‘অপারেশনের’ জন্য গত ২ বছরে অন্ততপক্ষে ১ হাজার যোদ্ধাকে গোপনে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়েছে গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী এই সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, শনিবার থেকে এই পর্যন্ত চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলে অন্তত ৯০০ জন ও গাজায় ৬৫০ জনেরও অধিক সংখ্যক মানুষ নিহত হন। ৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১০ কিলোমিটার প্রস্থ গাজা ভূখণ্ড একসময় মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন দল ফাতাহের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। পরে ২০০৭ সালে ফাতাহকে উচ্ছেদ করে এই ভূখণ্ডের দখল নিয়েছিলো হামাস।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org