দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনে ফিলিস্তিন প্রথমবারের মতো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বসার সুযোগ পেয়েছে। তাই এটি ছিল ফিলিস্তিনের জন্য এক ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত দিন।
এ বছরের মে মাসে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়, যেখানে ফিলিস্তিনকে সদস্যপদ লাভের শর্ত পূরণকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বানও জানানো হয় যেনো তারা ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ গ্রহণের বিষয়ে বিবেচনাও করে।
এই অধিবেশনে ফিলিস্তিন জাতিসংঘে কিছু অতিরিক্ত অধিকারও লাভ করেছে, এরমধ্যে অন্যতম হলো সদস্য রাষ্ট্রদের সঙ্গে বসার অধিকার, প্রস্তাব এবং এজেন্ডা উত্থাপন করার সুযোগ এবং বিভিন্ন কমিটিতে অংশগ্রহণের সুযোগও। তবে, ফিলিস্তিন এখনও ভোটাধিকার পায়নি।
আরব নিউজের এক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, মঙ্গলবারের এই প্রতীকী অর্জনকে জাতিসংঘে মিশরের প্রতিনিধিদল উষ্ণ সমর্থন জানান ও এটিকে ‘একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। অপরদিকে, ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা এর বিরোধিতাও করে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তার ভাষণে বলেন যে, ‘৭৯তম অধিবেশন এমন এক সময়ে শুরু হতে যাচ্ছে যখন বিশ্ব নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছে, তবে আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা সম্ভব।’ তিনি জাতিসংঘের দীর্ঘদিনের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করে আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ সবসময়ই বহুপাক্ষিক সমাধানের স্থান হিসেবেই কাজ করেছে, যেখানে সহযোগিতা, সংলাপ এবং কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।’
গুতেরেস অর্থনৈতিক অগ্রগতি, জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে আরও বলেছেন, ‘যদি আমরা ধাপে ধাপে কাজ করি, তাহলে আমরা একে অপরের প্রতি বিশ্বাস এবং আস্থা পুনর্গঠন করতে পারবো ও একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে অনেক কিছুই অর্জন করতে পারবো।’
অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন ক্যামেরুনের ফিলেমন ইয়াং, যিনি এই বছর সাধারণ পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org