দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডায়াবেটিক এমন একটি রোগ যা দীর্ঘদিন ধরা না পড়লে কিংবা সঠিক চিকিৎসা না হলে কিডনি, লিভার, চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। রক্ত পরীক্ষা করার আগেই শরীরে কোন কোন লক্ষণ দেখলে আপনাকে সতর্ক হতে হবে?
দীর্ঘদিন ধরে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মধ্যেই থাকতে হবে। তবে পারিবারিক ইতিহাস থাকলেও ডায়াবিবেটিস হয়নি ভেবে যারা নিশ্চিন্তে থাকেন, চুপিসারে কখন যে এই রোগটি থাবা বসাবে তাদের শরীরে, তা বোঝা প্রায় মুশকিল। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ধরা না পড়লে কিংবা সঠিক চিকিৎসা না হলে কিডনি, লিভার, চোখ ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে। শরীরে আরও বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে, যেগুলো দেখলে বোঝা যায়, কেও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন কি না।
রক্ত পরীক্ষা করার আগেই শরীরে কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে?
# সপ্তাহখানেক আগে দাড়ি কাটতে গিয়ে অনেকটা কেটে গেছে। দু-তিন দিনের মধ্যেই তা শুকিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ৭ দিন হয়ে গেলেও কিছুতেই তা সারতেই চাইছে না। এই লক্ষণ হলো রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে এমন হতে পারে।
# ইদানীং আবার প্রস্রাবের বেগের চোটে মাঝরাতে দু-তিন বার আপনার ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। পানি বেশি না খাওয়ার পরেও যদি এই সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে ডায়াবেটিস বাসা বেঁধেছে আপনার শরীরে।
# ঘন ঘন তেষ্টা পাচ্ছে এবং গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে? এই লক্ষণও কিন্তু রক্তে শর্করার ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার একটি ইঙ্গিত হতে পারে।
# ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে বার বার প্রস্রাবের কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে শর্করা ও বিভিন্ন খনিজ বেরিয়ে যায়। যে কারণে ক্লান্ত লাগাটা স্বাভাবিক। কারণ ছাড়াই শরীর ক্লান্ত লাগলে সতর্ক হতে হবে।
# দুপুরে পরিমাণ মতো সব কিছু খাওয়ার পরেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আবারও খিদে পাচ্ছে? রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে সারাক্ষণ এমনিভাবে খিদে পায়।
# ঘাড়, গলা বা দুই বাহুমূলে কালো ছোপ পড়ছে? নিয়মিত ঘরোয়া টোটকায় ত্বকচর্চা করেও ফল পাচ্ছেন না? দীর্ঘদিন ধরে রক্তে শর্করা বেশি থাকলে শরীরের এই বিশেষ বিশেষ স্থানে কালচে ছোপ পড়তে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org