দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘুমে ব্যাঘাত ঘটলে আমরা মনে করি মোবাইল ঘাটাঘাটির জন্যই বোধহয় এমনটি হচ্ছে। তবে শুধু মোবাইলই নয় ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্যে প্রাথমিকভাবে ত্বকে দু’ধরনের লক্ষণ শনাক্ত করা গেছে। রাতে নির্বিঘ্নে ঘুমোতে না পারার জন্যে দায়ী সেই দু’টি সমস্যায়।
অনেক সময় রাতের পর রাত ঘুমোতে পারেন না। প্রথমে ভাবতেন যে, মানসিক চাপ। আবার পরে জানতে পারলেন, মুঠোফোনের নীলচে আলোর প্রভাবেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে যে, ঘুম না আসার জন্যে মূলত দায়ী ত্বকের যাবতীয় রোগ। বার্লিনে ‘ইউরোপিয়ান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি অ্যান্ড ভেনেরোলজি কংগ্রেস’-এর জার্নালে এই সমীক্ষাটি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়।
ত্বকের বিভিন্ন প্রকার রোগ কীভাবে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে- সেটিই ছিল গবেষণার মূল বিষয়বস্তু। ২০টি দেশের প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ ও তাদের বিভিন্ন প্রকার ত্বকের সমস্যা নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। ‘অল প্রোজেক্ট’-এর এই সমীক্ষায় দেখা যায় যে, অনিদ্রাজনিত সমস্যায় ভুগছেন এমন ৪২ শতাংশ মানুষের ত্বকে কোনও না কোনও সমস্যা রয়েছেই। তাদের জীবনযাত্রার মানও উন্নত নয়। কর্মদক্ষতার দিক থেকেও পিছিয়ে পড়ছেন বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত প্রায় ৪৯ শতাংশ কর্মী।
ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্যে প্রাথমিকভাবে ত্বকে দু’ধরনের লক্ষণ শনাক্ত করা গেছে। প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ রাতে চুলকানির সমস্যায় দু’চোখের পাতা একেবারেই এক করতে পারেন না। প্রায় ১৭ শতাংশ মানুষ ত্বকে জ্বালার অনুভূতির কারণে ঘুমোতেও পারেন না। যাদের ত্বকে এই ধরনের সমস্যা রয়েছে, তাদের মধ্যে প্রায় ৮১ শতাংশই সকালে ঘুম থেকে উঠতে বেশ ক্লান্তি বোধ করেন। কাজের মধ্যে বা গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে বসে ঝিমোতে থাকেন ৮৩ শতাংশ। প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ ঘন ঘন হাই তোলেন।
সমীক্ষার প্রধান চিকিৎসক চার্ল্স তায়েব বলেছেন, রাতে ঘুম ভালো না হলে, শরীর ভালো না থাকার কথা। তাই অন্যান্য রোগ ও সামগ্রিক সুস্বাস্থ্যের জন্য অনিদ্রাজনিত সমস্যা নিরাময় করাও প্রয়োজন। কারও ত্বকের সমস্যা চোখে পড়লে আগে থেকেই সাবধান হতে পারে। সমীক্ষার সঙ্গে জড়িত আরও এক চিকিৎসক ব্রুনো হালিয়োউয়ার মতে, ঘুম হচ্ছে না বলে সাধারণ যেসব রোগী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন, তাদের ত্বকে কোনও রকম সমস্যা রয়েছে কি-না, আগে সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়াটা দরকার। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org