দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০২৩ খৃস্টাব্দ, ১৮ কার্তিক ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৫ হিজরি। দি ঢাকা টাইমস্ -এর পক্ষ থেকে সকলকে শুভ সকাল। আজ যাদের জন্মদিন তাদের সকলকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা- শুভ জন্মদিন।
যে মসজিদটি আপনি দেখতে পাচ্ছেন সেটি মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের মাচাইন শাহী মসজিদ। এটি একটি ঐতিহাসিক মসজিদ।
স্বাধীন সুলতানী আমলে হরিরামপুর উপজেলার মাচাইন একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম বলেই সুপরিচিত ছিলো। ১৪৯৩-১৫১৯ সালের কোন এক সময় সুলতান আলাউদিন হুসেন শাহ আসাম, ত্রিপুরা এবং উড়িষ্যা রাজ্য অভিযান করে। এই সময় সুলতান ঘাটি করেন এই মাচাইন গ্রামে।
এখানে সুলতান তার স্মৃতিচারণস্বরূপ নির্মাণ করেণ একটি মসজিদ। যা মাচাইন শাহী মসজিদ নামেই পরিচিত। সুলতান এই মসজিদটিতে শাসন কার্য পরিচালনা এবং ইবাদত বন্দেগী করতেন। সেই সময় জলপথে একদল নৌ-সৈন্য চলে যাওয়ার সময় দেখতে পান ইছামতি নদীর ধারে একটি বাঁশের মাচার উপর একজন লোক তসবীজপরত অবস্থায় বসে রয়েছেন। সৈন্যরা লোকটিকে জিজ্ঞেস করেন, এই জায়গার নাম কী? তিনি উত্তর করেছিলেন যে, ‘ মাচান ‘। যা পরবর্তীতে ‘মাচাইন’ নামেই পরিচিতি লাভ করে। তারপর সৈন্যরা লোকটির কাছে তার নাম এবং পরিচয় জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেন, তার নাম ‘ শাহ রুস্তম ‘ ও তিনি সুদূর বাগদাদ থেকে এসেছেন। পরবর্তী সময় এই সাধক মৃত্যুবরণ করলে তাকে মাচাইন শাহী মসজিদের পাশেই সমাহিত করা হয়, যা এখন হযরত শাহ রুস্তম বোগদাদী (রঃ) এর মাজার শরীফ নামেই পরিচিত। বর্তমানে মাচাইন শাহী মসজিদ দর্শন এবং শাহ রুস্তম (রঃ) এর- মাজার জিয়ারত মানিকগঞ্জ জেলাসহ আশেপাশের জেলার মানুষের কাছে একান্তই শ্রদ্ধার বিষয়। এই ঐতিহাসিক মাচাইন গ্রামের পুরনো শাহী মসজিদ এবং মাজার মানিকগঞ্জের মুসলিম পুরাকীর্তির দু’টি বিশেষ নজির। বর্তমানে এই মসজিদটি মানিকগঞ্জ জেলা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধিনেই রয়েছে।
তথ্যসূত্র : মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন -জেলা প্রশাসক (প্রাক্তন) সম্পাদিত এবং মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত বই “মানিকগঞ্জ জেলার ইতিহাস” পৃষ্ঠা নম্বর ৪০০ হতে ৪০১ পর্যন্ত।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org