দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও একাডেমিক অংশীদারিত্ব জোরদার করার লক্ষ্যে গত ৩১ অক্টোবর ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল একটি অপারেশনাল অ্যালায়েন্স চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি স্বাক্ষর বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে উভয় পক্ষের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করবে।
উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশের মধ্যে কৌশলগত, পারস্পরিকভাবে লাভজনক এবং ন্যায়সঙ্গত অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ২০২১ সালে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গোয়িং গ্লোবাল পার্টনারশিপ (জিজিপি) চালু করা হয়। এই প্রোগ্রামের আওতায় উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ (টিভেট) ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, গবেষণা সহযোগিতা, প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিকীকরণ, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, লিঙ্গ সমতা ও সবার অংশগ্রহণ (অন্তর্ভুক্তিকরণ) নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, নীতিনির্ধারক ও অন্যান্য পার্টনারদের মধ্যে অংশীদারিত্বের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে ব্রিটিশ কাউন্সিল ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী উচ্চশিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রায় ৫০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশে এই উদ্যোগের অধীনে ব্রিটিশ কাউন্সিল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহযোগিতায় উচ্চশিক্ষাযক্ষেত্রে শিক্ষাদান এবং শিক্ষাগ্রহণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরও কাজ করে যাবে,যা পূর্বের সেন্টার অব এক্সিলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিং উদ্যোগের ধারাবাহিকতা।
এই অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল এই চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির অন্যতম একটি অংশই হলো টিচিং এক্সিলেন্স প্রোগ্রাম যেটা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের শিখন-শিক্ষনের ব্যবহারিক পন্থা ও নেতৃত্বের কৌশল দক্ষতা উন্নয়ন; শিক্ষার্থী কেন্দ্রীক শিখন শিক্ষণ পদ্ধতি ও কার্যকরী মূল্যায়নের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য তৈরি করা হয়েছে. নবীন গবেষকদের গবেষণা বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়ন; শিক্ষকদের ইংরেজি দক্ষতা উন্নয়ন; নেতৃত্ব বিষয়ক কর্মসূচির উন্নয়ন; বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে উচ্চ শিক্ষা সেক্টরে একাডেমিক অংশীদারিত্ব তৈরি করা- এই চুক্তির অংশ।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিশশা ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ডক্টর ফেরদৌস জামান উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত এই অপারেশনাল অ্যালায়েন্স চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিশশা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাথে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে একাডেমিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিভিন্ন কোর্স তৈরি, ফ্যাকাল্টি বিনিময় ও গবেষণা সংক্রান্ত উদ্যোগকে উৎসাহিত করা গোয়িং গ্লোবাল পার্টনারশিপ প্রোগ্রামের লক্ষ্য। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে পরস্পরের জন্য হিতকর এমন অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে আমরা ইউজিসি এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করে যাবো।”
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য এবং চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, “ইউজিসির লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রকে উন্নত করা। আমরা এমন একটি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছি, যা শুধুমাত্র সবাইকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান করবে না, সেইসঙ্গে সর্বোচ্চ শিক্ষামান নিশ্চিত করবে ও আমরা ব্রিটিশ কাউন্সিলকে এই যাত্রায় বিশ্বস্ত পার্টনার হিসেবে পেয়ে আনন্দিত।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেজবাহউদ্দিন আহমেদ এবং ইউজিসি ও ব্রিটিশ কাউন্সিল এর অন্যান্য কর্মকর্তারা। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org