দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকের অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। এই অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা দূর করতে নিয়ম করে শরীরচর্চা এবং যোগাসন করতে হবে। তাছাড়াও, কয়েকটি খাবার নিয়মিত খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
আমরা জানি ঋতুস্রাব অনিয়মিত হলে মেয়েদের নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তলপেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা কিংবা পেটের পেশিতে টান, বমির প্রবণতা দেখা যায় কারও কারও ক্ষেত্রে। অনিয়মিত ঋতুস্রাবের অনেক রকম কারণ থাকতে পারে। হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যাওয়া কিংবা কমে যাওয়া, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম, জরায়ুতে সমস্যা বা আরও নানা জটিল কোনও শারীরিক সমস্যার জন্য এমনটি হতে পারে। তাই অনিয়মিত ঋতুস্রাব হলে তার সঠিক কারণ জানার জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার। চিকিৎসার পাশাপাশি এই সমস্যা দূর করতে নিয়ম করে শরীরচর্চা এবং যোগাসনও করতে পারেন। এতেও আপনি উপকার পাবেন। তাছাড়াও, কয়েকটি খাবার রয়েছে, যেগুলো নিয়মিত ডায়েটে রাখলে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা হতে মুক্তিও পেতে পারেন।
আদা
আদাতে থাকা ‘জিঞ্জেরল’ নামক উপাদান প্রদাহের সমস্যা দূর করে থাকে। নিয়ম করে আদা চা খেলে ঋতুস্রাবকালীন সময়ের অনেক রকম সমস্যা দূর হতে পারে।
কাঁচা পেপে
জরায়ুর পেশি সঙ্কুচিত করতে সাহায্য করে পেঁপে। যে কারণে জরায়ু থেকে রক্ত এবং টিস্যু খুব সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে। এই সব্জি শরীরে ইস্ট্রোজেনের হরমোনের ক্ষরণও নিয়ন্ত্রণ করে। এই হরমোনের ক্ষরণ কিছুটা হলে তবেই ঋতুস্রাব নিয়মিত হবে।
জোয়ান
যেসব নারী অনিয়মতি ঋতুস্রাবের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য জোয়ান পানি বেশ উপকারী। জোয়ান ফোটানো পানি খেলে জরায়ু বেশি শিথিল হয়, যে কারণে ঋতুস্রাব নিয়মিত হয়।
আনারস
আনারসে থাকা ব্রোমেলেইন উৎসেচক ঋতুস্রাব নিয়মিত করতে সাহায্য করে থাকে। শরীরে রক্ত সঞ্চালনের হার বৃদ্ধিতেও এটি সাহায্য করে। সে কারণে গর্ভবতী নারীদের আনারস খেতে বারণ করেন চিকিৎসকরা।
আখের গুড়
আখের গুড়ে পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের মাত্রা থাকে বেশি। নিয়মিত আখের গুড় খেলে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। সেইসঙ্গে শরীর ভিতর থেকে ঠাণ্ডা রাখতেও সাহায্য করে এই গুড়। তাই ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে হলে গুড় খেতে পারেন বা গুড়ের শরবত করে খেতে পারেন। তাতে বেশ উপকার পাবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org