দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকতে থাকতে দু’জন মানুষ পরস্পরের ভালো-মন্দ চিনে ফেলেন। যে কারণে কোনো এক সময় সম্পর্ক জেল্লা হারাতে পারে। তবে হাল ছাড়লে কিন্তু চলবে না, সম্পর্ক মজবুত করতে হবে নতুনভাবে।
অনেকেই বলেন, যে প্রেমে যতো বেশি ঝগড়া, সে প্রেমে নাকি ততোই ভাব। ঝগড়ার পর মানভঞ্জনের পালা তো মিষ্টি একটা বিষয় হয়ে ওঠে। তবে সেই ঝগড়ার পরিমাণ যতোক্ষণ সুন্দর একটা সীমা পর্যন্ত আবদ্ধ থাকে, ততোক্ষণই ভালো। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত রাগ, অশান্তি, ঘন ঘন ঝগড়া সম্পর্কের মধ্যে গুরুতর ছেদও এনে দিতে পারে। লিভ ইন রিলেশনই হোক কিংবা সাংসারিক বন্ধনই হোক, দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকতে থাকতে দু’জন মানুষ পরস্পরের ভালো-মন্দ চিনে ফেলেন। যে কারণে মুগ্ধতা হারাতে থাকে ও সম্পর্কও তখন তার জেল্লা হারায়। তবে হাল ছাড়লে কিন্তু চলবে না, সম্পর্কের বাঁধনকে আরও মজবুত করতে কোন কোন অভ্যাসে বদলে আনতে হবে সেই বিষয়টিই রয়েছে আজ।
সঙ্গীকে সময় দিন
কর্মব্যস্ত যুগে প্রত্যেকই নিজস্ব কাজ এবং জগৎ নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করেন। দু’জনেই চাকুরিজীবী হলে তো আর কথাই নেই, ব্যস্ততা আরও বাড়ে প্রচণ্ড আকারে। সম্পর্কে একে অপরের জন্য সময় বের করা তখন ভীষণ জরুরি। এরপরও সঙ্গীর জন্য দিনের একটা সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। বাড়ি ফিরে ঘণ্টাখানেক হলেও একান্তে সময় কাটাতে হবে। মোবাইলে ডুবে না থেকে সঙ্গীর সঙ্গে মনের কথা ভাগ করতে হবে। ব্যস্ততা থেকে সময় বের করে একসঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনাও করতে পারেন।
খোলামেলা আলোচনা করুন
কখনও মনে কোনও রকম সন্দেহ হলে বা কোনও সমস্যায় পড়লে সঙ্গীর সঙ্গে তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। গোপনীয়তা যতো কমবে, ততোই সহজ হবে আপনার সম্পর্কের রসায়ন। ঝগড়া-ঝাঁটি মেটাতেও আলোচনার জায়গা প্রশস্ত রাখতে হবে। একে অপরের সঙ্গে ঝামেলা হলে অপরজন কখন আপনার কাছে ক্ষমা চাইবেন, সেই অপেক্ষায় না থেকে আপনি নিজেই আলোচনা শুরু করুন।
তারিখ মনে রাখা
সঙ্গীর জন্মদিন কিংবা নিজেদের বিয়ের তারিখ, বা জীবনের বিশেষ দিনগুলো মনে রাখার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ দিনগুলোতে অবশ্যই একান্তে সময় কাটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সঙ্গীকে পছন্দের উপহার দিতে হবে। দামি কোনো উপহার না দিলেও চলবে, আপনি যে দিনটা মনে রেখে তারজন্য ভেবেছেন, সেটিই তার মনে দাগ কাটবে।
কাজের অদলবদল
মাঝে-মধ্যে পরস্পরের কাজের চাপ কমাতে সঙ্গীর কাজ ভাগ করে নিতে পারেন। তাছাড়া ছেলেদের কাজ, মেয়েদের কাজ বলে সাংসারিক কাজে কোনো রকম প্রভেদ হয় না। সম্পর্কে নতুন মশলা যোগ করতে তার কাজে সাহায্য করুন, কখনও সখনও সেই কাজ সেরেও দিন নিজে। এতে একসঙ্গে সময়ও কাটানো হবে।
প্রশংসা করুন
একে অপরের দোষ-ত্রুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেও সঙ্গী কিছু ভালো কাজ করলে তার প্রশংসা করতেও ভুলে যাবেন না। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে একে অপরের প্রশংসা করতে ভুলবেন না অবশ্যই। এতেও আরও মজবুত হবে সম্পর্কের বন্ধন। এভাবে একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org