ঘুম থেকে উঠেই ক্লান্ত লাগলে শরীরে কোন রোগের আভাস?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ মেয়েদের দেখা গেলেও, ছেলেদেরও রক্তে আয়রণের ঘাটতি বর্তমান সময় বড় একটি সমস্যা। রক্তে আয়রণের অভাব হলে সৃষ্টি করতে পারে নানা ধরনের জটিলতা। তাহলে কোন কোন লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে হাঁপিয়ে পড়লেও আমরা তেমন একটা গুরুত্ব দিই না শরীরকে। তখন এই ভাবনাই মাথায় আসে যে, প্রচুর কাজের চাপে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে শরীর। বিশ্রাম নিলেই আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠবেন, এই ভাবনা থাকে অনেকের মধ্যে। তবে সমস্যাটা হতে পারে আরও গভীরতর। মেয়েদের তো বটেই, ছেলেদের রক্তে আয়রণের ঘাটতিও এখনকার দিনে বড় একটি সমস্যা। রক্তে আয়রণের অভাব হলে সৃষ্টি করতে পারে নানা ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা।

কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?

Related Post

শারীরিক ক্লান্তি ছাড়াও শরীরে আয়রণের ঘাটতির নানা লক্ষণও রয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেক সময় ক্লান্ত লাগে শরীর। চোখে ফ্যাকাসে ভাব। কোষে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে অল্পতেই হাঁপ ধরে যায়। সঙ্গে রয়েছে মাথা ধরার মতো সমস্যাগুলো। অনেক সময় ত্বকের জেল্লা হারিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও হয়। কমবেশি এই ধরনের লক্ষণগুলো শরীরে নিয়মিত দেখা দিলে বুঝতে হবে যে, এটি নেহাতই কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি নয়। আর তখন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো করাতে হবে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা। তাহলে ধরা পড়বে রক্তাল্পতা এবং আয়রণের ঘাটতির প্রমাণ।

রক্তে আয়রণের মাত্রা বাড়াতে প্রথমেই দরকার এমন খাবার, যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ। খাবারে প্রাপ্ত আয়রণ দু’ধরনের হয়ে থাকে- যেমন হিম আয়রণ এবং নন-হিম আয়রণ। হিম আয়রণ পাওয়া যায় মাছ, মাংস ও ডিমের মধ্যে। এই ধরনের আয়রণের প্রায় শতকরা ৪০ শতাংশ সরাসরি শরীর শোষণ করতে পারে। অপরদিকে নন-হিম আয়রণ পাওয়া যায় উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে। তবে সব আয়রণ শরীর শোষণ করতে পারে না। তাই আয়রণ-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে করে শরীর তা শোষণ করতে পারে। যেমন ভাতের সঙ্গে শাক ভাজা খাওয়ার সময় দুই ফোঁটা লেবুর রস দিতে পারেন। এতে আয়রণের শোষণ শরীরে হবে ভালো হবে। পালংয়ের মতো শাক, ব্রকোলি, ডাল, বিন, বাদাম, বেদানা, নানা ধরনের বীজ, ব্রাউন রাইস, নানা সিরিয়াল কিংবা দানাশস্য, হোল হুইট খেতে পারেন। এছাড়াও ভিটামিন এ এবং সি-সমৃদ্ধ খাবার তালিকায় রাখলে তা আয়রণ শোষণ করতে শরীরকে সাহায্যও করে।

শরীরে আয়রণের ঘাটতি দূর করতে অনেকেই আবার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আয়রণ সাপ্লিমেন্ট খান। এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট থেকে অনেক সময় পেটব্যথা, পেট খারাপের মতো বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি না খাওয়াই ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on নভেম্বর ২০, ২০২৩ 3:40 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

জিভ দেখেও কিন্তু রোগ চেনা যায়! কোন উপসর্গ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ শরীরে পানির ঘাটতি হলেও জিভ সাদা হয়ে যায়। নিয়মিত…

% দিন আগে

বেড়ে ওঠার সময় শিশুকে দুধ খাওয়ার সঙ্গে রুটিনেও আনতে হবে বদল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার শিশু বেড়ে ওঠার সময় কেবলমাত্র দুধভাত ও শাকসব্জি খাওয়ানোই…

% দিন আগে

ফেসবুকে পছন্দের পুরনো রিলস খুঁজে পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফেসবুকে কখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যায় বোঝা যায়…

% দিন আগে

শীঘ্রই আসছে জিমের ‘মেঘবালিকা’ নামে নতুন নাটক

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মাফতুহা জান্নাত জিম। মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজে…

% দিন আগে

স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বন্দুকধারীর গুলি: আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে গুলি করে অজ্ঞাত বন্দুকধারী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম…

% দিন আগে

পৃথিবীতে এমন ৫টি দেশ রয়েছে যেখানে ২৪ ঘণ্টাই দিনের আলো থাকে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি বিশ্বের প্রায় জায়গাতেই ১২ ঘণ্টার দিন, ১২ ঘণ্টার…

% দিন আগে