দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষ শিশুদের হত্যা করছে ইসরায়েল। টানা দেড় মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
এবার প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে রাজি হলো ইসরায়েল।
গতকাল সোমবার (২০ নভেম্বর) ইসরায়েলভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল কান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, মূলত হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে ইসরায়েলের শাসকগোষ্ঠী এই সমঝোতায় আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
জানা গেছে, হামাস যদি তার হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেয়, তাহলে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদি অধ্যুষিত ভূখণ্ডটির সরকার। বর্তমানে অপেক্ষা কেবলমাত্র হামাসের জবাবের।
জিম্মিদের মুক্ত করতে হামাসের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর বিষয়টি ইসরায়েল যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে বলে দাবি করে নিজেদের প্রতিবেদনে কান আরও জানিয়েছে, ‘বল বর্তমানে হামাসের কোর্টে। হামাস যদি ইতিবাচক সাড়া দেয়, সেইক্ষেত্রে খুব সহজেই একটি সমঝোতা হতে পারে।’
ইতিপূর্বে একই দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকেও এই ইঙ্গিতই দেওয়া হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি জানিয়েছিলেন যে, গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
‘দু’পক্ষের মধ্যেই সমঝোতার একটি পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। আমরা আশা করছি যে, এটি হবে। তবে এখনও অনেক কাজ বাকিই রয়ে গেছে,’ হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে এটি তুলে ধরেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org