দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হার্ট অ্যাটাক হোক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টই হোক- যে কোনও হৃদরোগের মূল উৎস হলো প্রতিদিনের জীবনের অনিয়ম। কোন পথে হাঁটলে ঝুঁকি এড়ানো যাবে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট-থেকে?
মানুষের হৃৎপিণ্ড হঠাৎ শরীরে রক্ত সরবরাহ করা বন্ধ করে দেয়। হৃৎপিণ্ড রক্ত পাম্প করা বন্ধ করে দিলেই মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ও শেষ পর্যন্ত সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন রোগী। শারীরিক এই অবস্থাকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বলে। অনেকেই অবশ্য হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টকে গুলিয়ে ফেলেন।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট-এর নেপথ্যে একাধিক কারণও রয়েছে। যারমধ্যে হার্ট অ্যাটাক অবশ্য অন্যতম। জন্মগতভাবে হার্টের সমস্যা থাকলেও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের পূর্বে কিছু উপসর্গও দেখা যায়। হালকা বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শারীরিক অস্বস্তি, মাথা ঘোরার মতো নানা সমস্যাও দেখা দিতে শুরু করে। অনেকেই এই লক্ষণগুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখেন না। যে কারণে পরিণতি হয় মারাত্মক।
# পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবই হৃদরোগের অন্যতম কারণ। ঝুঁকি এড়াতে দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। একটানা যদি ঘুম না-ও হয়, তবে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঘুমিয়ে নেওয়াটা প্রয়োজন।
# হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চার কোনোই বিকল্প নেই। এছাড়াও ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা থেকেও অনেক সময় হৃদরোগের আশঙ্কাও বাড়ে। তাই নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে হবে। সব সময় খুব ভারী শরীরচর্চা করতে হবে এমন কোনও মানে নেই। হালকা ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি বা যোগাসন করলেও হয়।
# ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইড ও বাড়তি ওজনের মতো সমস্যা হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে এই সমস্যাগুলোর জন্য অনেকেই নিজের ইচ্ছামতো ওষুধ খান। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া কিংবা ওষুধ বন্ধ করা, দুই-ই ডেকে আনতে পারে বড় ধরনের বিপদ। বিশেষ করে যারা রক্তচাপের ওষুধ খান, তাদের এই বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়াটা জরুরি।
# হৃদযন্ত্রের নিয়মিত পরীক্ষায় অনেক ক্ষেত্রে প্রতিরোধ করা যেতে পারে হৃদরোগ। তবে অনেকেই বুকে ব্যথা, ক্লান্তি কিংবা শারীরিক অস্বস্তির মতো লক্ষণগুলোকেও গ্যাসের সমস্যা বলে এড়িয়ে যান। এই ধরনের সমস্যা অবহেলা করা মোটেও ঠিক হবে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org