দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে হলে ফুলকপির মতো করে রসিয়ে ব্রকোলিও রান্না করা যাবে না। তবে ব্রকোলির মধ্যে সব উপাদানই বজায় থাকবে।
শীতকাল আসতে না আসতেই বাজার ছেয়ে যায় ফুলকপিতে। তরকারি, চচ্চড়ি, খিচুড়ি বা রোস্ট- ফুলকপি ছাড়া ভাবাই যায় না। তবে বেশি ফুলকপি খেলে পেটে গ্যাসও হয়। আবার হজমের সমস্যাও হতে পারে। তাই স্বাস্থ্য সচেতনেরা আবার ফুলকপিও খেতে চান না। তাদের জন্যই রয়েছে ব্রকোলি। স্যালাড, স্যুপ না খেলেও সাধারণ আলু-ফুলকপির তরকারিতে ওই ফুলকপি সরিয়ে তার জায়গায় ব্রকোলি দেন অনেকেই। ফুলকপির চেয়ে ব্রকোলির দামও অনেক বেশি। তবে এতো খরচ করে যে ব্রকোলি খাচ্ছেন, তা শরীরের কোনও উপকারই করছে কী? না কি সস্তায় ফুলকপি খেলেই ভালো হতো?
পুষ্টিবিদরা বলেছেন, সস্তার ফুলকপিতে ভিটামিন এ, ই, কে, ভিটামিন বি৫, বি ৬, ফোলেট, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও জ়িঙ্কের মতো একাধিক জরুরি ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। সেইসঙ্গে ফুলকপি হলো ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের ভাণ্ডার। তাই নিয়মিত এই সব্জি পাতে রাখলে হার্টের রোগ বা ক্যান্সার প্রতিরোধ করাও সম্ভব হবে। এমনকি এতে মজুত থাকা ফাইবার ওজন কমাতেও সাহায্য করে থাকে। তাই আপনার প্রতিদিনের পাতে এই সব্জির পদ রাখা যেতে পারে।
আবার, ব্রকোলিতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ৬, রাইবোফ্ল্যাভিন, নিয়াসিন, থায়ামিন, ফসফরাস,আয়রণ, জিঙ্ক, ক্যালশিয়ামের মতো জরুরি ভিটামিন এবং খনিজ। শুধু তাই নয়, এতে মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও। যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। নিয়মিত এই সব্জি খেলে ডায়াবেটিস, অস্টিয়োপোরোসিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এমনকি, অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে ব্রকোলি।
তবে পুষ্টিগুণের বিচারে ফুলকপির চেয়ে এগিয়ে আছে ব্রকোলি। তবে পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে গেলে ফুলকপির মতো কিন্তু রসিয়ে ব্রকোলি রান্না করা যাবে না। তাহলেই ব্রকোলির মধ্যে সমস্ত উপাদান বজায় থাকবে। তবে গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে ফুলকপি কিংবা ব্রকোলি কম খাওয়াই উত্তম। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org