দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স ৪০-এর পর চোখে দরকার বাড়তি যত্ন। চোখের যত্ন নেওয়া যে খুব কঠিন বিষয়, মোটেও তা নয়। চোখ ভালো রাখতে কীভাবে সতর্ক হতে হবে সেই বিষয়ে আলোচনা করা হবে আজ।
আমরা সবাই জানি চোখ আমাদের শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর একটি অঙ্গ। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চোখ নিয়ে শুরু হয় নানা রকম সমস্যা। জীবনযাপনে নানা অনিয়মের কারণে কম বয়সেও চোখের সমস্যার সম্মুখীন হন অনেকেই।। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের অভাবে বিশ্রাম পায় না চোখ। অথচ যতো চাপ চোখের উপরেই আসে। অফিসে কম্পিউটার, ল্যাপটপের সামনে দীর্ঘক্ষণ কাজ বা বাড়ি ফিরে মোবাইলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিল দেখার ঠেলায় চোখের বিশ্রাম তেমন করে হয় না। কম বয়সের এই অভ্যাস থেকেই বার্ধক্যে চোখে দেখা দিতে পারে নানা রকম সমস্যা। ৪০-এর পর চোখের দরকার বাড়তি যত্ন। চোখের যত্ন নেওয়া যে খুব কঠিন কাজ, তা নয়। চোখ ভালো রাখতে কীভাবে সতর্ক হতে হবে সেই বিষয়টি সম্পর্কে আজ আলোচনা করা হবে।
# প্রথমত: চোখ ভাল রাখতে বেশি করে পানি খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। শরীরে পানির মাত্রা যতো বেশি থাকবে, চোখও ততোই ভাল থাকবে। দীর্ঘক্ষণ একদৃষ্টে কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। মাঝে-মধ্যে চোখে পানির ঝাপটা দিন।
# টানা সারাক্ষণ টিভি কিংবা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ থাকে ইদানিং অনেকের।তবে সেই অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে চোখের কথা ভেবেই। তা না হলে চোখ শুকিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরিও হতে পারে। যদি টানা কম্পিউটারে কাজ করতেই হয়, তবে পর্দার সঙ্গে চোখের যেনো থাকে যথেষ্ট দূরত্বও। বিশেষ করে যারা কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন, তাদের নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো দরকার। সেই সঙ্গে, এখন বিশেষ ধরনের চশমাও পাওয়া যায় যা বৈদ্যুতিক পর্দা থেকে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করতে পারে। প্রয়োজনে পরতে হবে নীল এবং অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধক চশমাও।
# যারা কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপে কাজ করেন, তাদের নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। অতিরিক্ত রোদে বের হওয়া চোখের জন্য ভালো নয়। সূর্যের আলো সরাসরি যাতে চোখে বেশিক্ষণ না পড়ে, সেজন্য কালো রোদচশমা পরে নিতে পারেন। খুব চড়া রোদে খালি চোখে বের হবেন না।
# শরীর সুস্থ রাখতে যেমন নিয়মিত শরীরচর্চা করা প্রয়োজন, তেমন চোখ ভালো রাখতে করতে হবে চোখের ব্যায়ামও। এই ক্ষেত্রে মেনে চলতে পারেন ২০-২০ নিয়মটি। এই নিয়ম অনুসারে ২০ মিনিট একটানা পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার পরই অন্তত ২০ সেকেন্ড ২০ ফিট দূরত্বের কোনও বস্তুর দিকে আপনাকে তাকিয়ে থাকতে হবে। সেইসঙ্গে, বার বার চোখের পলক ফেলাটাও জরুরি।
# চোখের কোনও রকম ক্ষতি রুখতে বছরে অন্তত এক বার চোখের পরীক্ষা করানোটা দরকার। নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করালে গ্লুকোমা, ছানির মতো সমস্যাও এড়ানো সম্ভবপর হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org