দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জাতিসংঘ এবং অন্যান্য বেসরকারি দাতব্য সংস্থাগুলো মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেখানে গত কয়েকদিন ধরে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াইও চলছে।
মিয়ানমারের রাখাইনে কার্যক্রম পরিচালনা করা বেসরকারি সংস্থার একটি বিশ্বস্ত সূত্র স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নারিনজারা নিউজকে জানিয়েছেন যে, অঞ্চলটিতে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য যেসব দাতব্য সংস্থা মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে তারা সেখানকার চলমান সংঘাত হতে দ্রুত সরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
সূত্রটি বলেছে যে, ‘ইউএনওসিএইচএ এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে ও রাখাইন ছাড়ার সব ব্যবস্থাও করছে। তারা অন্যান্য বেসরকারি সংস্থার সরে যাওয়ার পুরো বিষয়টিই সমন্বয় করছে। যার মধ্যে রয়েছে ডব্লিউএফপি এবং ইউএনএইচসিআর।’
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, মংডু এবং বুচিডংয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকেও এইসব সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ করার পরিকল্পনা চলছে।
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু ও বুচিডং থেকে এইসব সংস্থার কর্মীরা প্রথমে রাখাইনের রাজধানী সিত্তেতে যাবেন। তারপর তারা সেখান থেকেই নিজ গন্তব্যে চলে যাবেন।
গত ১৩ নভেম্বর রাখাইন নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তারপর ওই রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েন।
রাখাইনের রামরিতে কর্মরত বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন যে, রাজ্য থেকে এই মুহূর্তে এইসব আন্তর্জাতিক সংস্থার সরে যাওয়ার বিষয়টি বেশ উদ্বিগ্নের। কারণ চলমান সংঘাতের কারণে যেসব মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদের জন্য এখন মানবিক সহায়তা সবচেয়ে বেশি দরকার।
সিত্তের কায়ে ফিন মুসলিম ক্যাম্পের জনৈকা নারী নারিনজারা নিউজকে জানিয়েছেন যে, চলমান সংঘাতের কারণে তারা কোনো রকম কাজকর্মই করতে পারছেন না। যে কারণে এইসব সংস্থার কাছ থেকে সহায়তা নিয়েই তাদের চলতে হচ্ছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org