দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের চলমান ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ‘বসবাসের অযোগ্য’ হয়ে পড়েছে বলে ঘোষণা করলো জাতিসংঘ।
বিশ্ব সংস্থাটি বলেছে যে, ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা এতোটাই বেশি যে, এই উপত্যকাকে আবার বাসযোগ্য করতে হাজার হাজার কোটি ডলার অর্থ ও কয়েক দশক সময় লেগে যাবে।
জাতিসংঘের ‘কনফারেন্স অন ট্রেড এন্ড ডেভেলপমেন্ট’ সংস্থা কিংবা আঙ্কটাড বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে এই তথ্য দিয়েছে।
প্রায় ৪ মাস আগে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ওপর ইসরায়েলের গণহত্যা অভিযানের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা শেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় আঙ্কটাড।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার শতকরা ৮৫ ভাগ অধিবাসী তাদের সহায় সম্বল হারিয়েছেন ও উপত্যকার অর্থনৈতিক কার্যক্রম একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছ। যে কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এই উপত্যকার দারিদ্র এবং বেকারত্ব পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গাজায় কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে বেকারত্বের হার ৭৯.৩ শতাংশে পৌঁছেছে ও জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত উপত্যকার ৩৭ হাজার ৩৭৯টি ভবন আংশিক কিংবা পুরোপুরিভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, গাজা উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শিশু। এদের মাথা গোঁজার ঠাই এখন নেই বললেই চলে।
মানুষের কোনো আয়ের উৎসই নেই। তাদের খাবার, পানি, পয়োঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার সুযোগ পুরোপুরি কিংবা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org