মিয়ানমারের জান্তা পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মিয়ানমারের জান্তা সরকার সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার ৩ বছর পর এই মুহূর্তে সবথেকে খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি। ২০২১ সালের ক্ষমতা দখলের পর উত্তেজনা চললেও এতো কোণঠাসা পরিস্থিতিতে কখনও পড়েনি দেশটির সেনাবাহিনী। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে!

গত বছরের অক্টোবরে জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ শুরু হওয়ার পর হতে সামরিক টহল চৌকি, অস্ত্রাগার এবং বেশ কিছু শহরের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বিদ্রোহী গ্রুপের হাতে। সর্বশেষ ঘুমধুম সীমান্তে বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে মিয়ানমারের শতাধিক সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করে, যাদের মধ্যে অনেকেই আহত। শুধু বাংলাদেশই নয়, প্রতিবেশি আরও দুটি দেশ চীন এবং ভারতেও মিয়ানমারের সেনারা এর পূর্বেও আশ্রয় নিয়েছে। এই ধরনের বিজয় বিদ্রোহী অন্য গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক বাহিনীর ওপর আক্রমণে আরও উৎসাহিত করেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের বিরোধী সশস্ত্র দলে জাতিগত ২০টি গোষ্ঠীর অন্তত ১ লাখ ৩৫ হাজার সদস্য, ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) আওতায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের ৬৫ হাজার সদস্য ও সিভিল ডিসঅবিডিয়েন্ট মুভমেন্টের অন্তত প্রায় ২ লাখ কর্মী রয়েছে।

Related Post

ধারনা করা হচ্ছে যে, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীতে অন্তত ৪ লাখ সেনা সদস্য রয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্সটিটিউট ফর পিসের তথ্যানুসারে, দেশটিতে সামরিক বাহিনীর প্রায় দেড় লাখ সেনা রয়েছে। যারমধ্যে কমব্যাট সেনা সদস্য প্রায় ৭০ হাজার।

সর্বশেষ সেনা অভ্যুত্থানের পর হতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গত ৩ বছরে দেশের অনেক স্থানেই তাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। বর্তমানে সামরিক বাহিনী এমন সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে যা এর আগে মিয়ানমারের ইতিহাসে কখনও দেখেনি কেও। সামরিক বাহিনীর মধ্যেও নজিরবিহীন আত্মসমর্পণের ঘটনা দেখা যায়। সামরিক বাহিনীর নেতারাও সামরিক পরাজয় মানতে বাধ্য হচ্ছেন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব:) এমদাদুল ইসলাম একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে গেছে ভাবলে সেটি ভুল হবে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যদি সিত্তে কিংবা নেপিদোতে বা ইয়াঙ্গুনের আশপাশে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ হতো তাহলে আশঙ্কা করা যেতো যে তারা দুর্বল হয়ে গেছেন। তবে সেটি কিন্তু দেখা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার ন্যাশনাল ডিফেন্সের সঙ্গে আরাকান আর্মির তেমন কোনও যোগসূত্রই নাই। তাদের যোগসূত্র রয়েছে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্ট আর্মি, শান, তাং কিংবা ওয়া আর্মির সঙ্গে। তারা আবার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।

বরং বর্তমানে নর্দান অ্যালায়েন্স কিংবা ফ্রেন্ডশিপ অ্যালায়েন্স চীনের আশীর্বাদপুষ্ট। এখানে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীও আবার চীনের আশীর্বাদপুষ্ট। বরং এটা চীনের একটি সুনিপুণ কৌশল বলেই মনে করেন তিনি। আরাকানে ভূ-রাজনৈতিক কৌশল এবং ভূ-রাজনৈতিক অর্থনীতি বিষয়ক বিপুল স্বার্থ রয়েছে চীন এবং ভারতের। সেটির ওপর পারস্পরিক আঘাত হানার প্রচেষ্টা থেকে এই যুদ্ধ চলছে বলেই মনে করেন তিনি।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৪ 10:22 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

গবেষণা যা বলছে: বরফপানিতে গোসল করা কী আদৌ ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বরফপানিতে গোসল করা কী আদৌ ভালো? কেও কেও বলেন, শরীরে…

% দিন আগে

ওজন ঝরাতে লেবু পানিতে দ্রুত উপকার পেতে সঙ্গে মেশাতে হবে আরও কয়েকটি উপাদান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ লেবুতে থাকা ফাইবারের কারণেই পেটভার হয়ে থাকে। অন্য কিছু…

% দিন আগে

সন্তানের হাতে যেসব সেটিংস বদলে দেবেন স্মার্টফোন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজকাল ৮ থেকে ৮০ সবার হাতেই স্মার্টফোন। এর সুবিধা যেমন…

% দিন আগে

জোভান-তিশার নতুন নাটক ‘কাপল অব দ্য ক্যাম্পাস’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান প্রজন্মের তারকা ফারহান আহমেদ জোভান এবং তানজিন তিশা জুটি…

% দিন আগে

তুরস্কে এক হাজারের বেশি হামাস যোদ্ধা চিকিৎসা গ্রহণ করছে: এরদোয়ান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন যে, ‘ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী…

% দিন আগে

এই ছবিতে লুকিয়ে আছে খরগোশ: আপনি কী সেটি খুঁজে বের করতে পারবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে ছবিটি আপনারা দেখছেন সেটি একটি জঙ্গলের রাস্তার। সেই রাস্তায়…

% দিন আগে