দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসির ‘ভরসার নতুন জানালা’ শীর্ষক কৃষি সহায়তামূলক প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের।
৯ ফেব্রুয়ারি ইউসিবির অর্থায়নে লালমনিরহাটের পূর্ব হরিণচড়ায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়ার চর উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র (সিডিআরসি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর। এই সময় উপস্থিত ছিলেন ইউসিবি-র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে ডেপুটি গভর্নর প্রকল্প এলাকায় নতুন সৌর সেচ পাম্প এবং কৃষকদের জন্য বিশ্রাম ছাউনি উদ্বোধন করেন।
দেশে খাদ্য নিরাপত্তা এবং উন্নত পুষ্টিমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি জলবায়ু-সহিষ্ণু টেকসই কৃষির প্রসার ঘটাতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়ে গত বছরের শুরুতে ‘ভরসার নতুন জানালা’ শীর্ষক উদ্যোগ গ্রহণ করে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজেদের করপোরেট সামাজিক দায়িত্বের (সিএসআর) অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
মাঠ পরিদর্শনকালে স্থানীয় উপকারভোগী কৃষকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, “টেকসই উপায়ে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা একইসাথে যেমন- পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, তেমনি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। তামাক চাষ অধ্যুষিত এ অঞ্চলে কৃষকরা এখন গম ও ভুট্টা চাষ করছে। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি বিষয়। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি গৃহীত এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের কৃষকরা যেমন নানাভাবে লাভবান হচ্ছেন, তেমনি এই উদ্যোগ কৃষিখাতের উন্নয়নের মাধ্যমে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখছে। দেশে কৃষিখাতের প্রবৃদ্ধিতে বেসরকারি খাতের এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে অন্যান্যদের জন্য উদাহরণ তৈরি করছে ইউসিবি। তাদের উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।”
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো: আনোয়ারুল ইসলাম, ইউসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও আরিফ কাদরী, অতিরিক্তি ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তাহমিদুজ্জামান, আরডিএর যুগ্ম পরিচালক ড. আবদুল মজিদ প্রামাণিক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি এবং মানুষ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও কৃষি তথ্য বিশ্লেষক রেজাউল করিম সিদ্দিকসহ ইউসিবি এবং আরডিএ-র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
ইউসিবি এবং আরডিএ কর্তৃক যৌথভাবে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের অধীনে তামাক চাষ অধ্যুষিত এই এলাকার একশ একর জমিতে গম উৎপাদন শুরু করেন কৃষকরা। দেশের উত্তরাঞ্চলের জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা কৃষক পরিবারদের গম এবং ভুট্টা উৎপাদন কর্মসূচির মাধ্যমে সার ও সেচসহ উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট উপকরণ সহায়তা দান, কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করা এবং তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান ও পরিবারের সদস্যদের জীবনমান উন্নয়নের উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হয়।
উল্লেখ্য, লালমনিরহাট ছাড়াও রংপুর ও গাইবান্ধায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইউসিবি। প্রকল্পে কৃষকদের বীজ, সার, কীটনাশক, ড্রাইং ম্যাট ও মাড়াই যন্ত্রসহ প্রয়োজনীয় কৃষিযন্ত্রের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ এবং বুকলেট দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের প্রাথমিক প্রাক্কলন অনুযায়ী, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের কারণে প্রায় চারশ মেট্রিক টনেরও বেশি গম এবং প্রায় আড়াই শ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদিত হবে, যার মাধ্যমে এই অঞ্চলের কৃষকদের সম্ভাব্য আয় হবে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org