দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোনো কর্পোরেট চাকরি নয়, কেবলমাত্র ভিক্ষা করেই মাসে আড়াই লাখ এবং বছরে লাখ বিশেক উপার্জন করেন জনৈকা মহিলা!
ভারতের এক পরিসংখ্যান বলছে যে, দেশটিতে মোট করদাতাদের মাত্র ১.৩ শতাংশ বছরে ২০ লক্ষ টাকা কিংবা তার বেশি উপার্জন করে থাকেন। যা যে কোনও কর্পোরেট চাকরির বেতনের থেকেও বেশি।
আর তাকে কোথাও যেতেই হয়নি, কোনও কাজও করতে হয়নি। শুধু ভিক্ষার ঝুলিটি নিয়েই শহরের এক ব্যস্ত মোড়ে বসে থেকেছেন তিনি। তাতেই গত দেড় মাসে আড়াই লক্ষ টাকা উপার্জন হয়েছে। নিজেই স্বীকার করেছেন ইনদওরের ওই মহিলা।
গত বুধবার তাকে ও তার ৮ বছর বয়সী কন্যাকে মধ্যপ্রদেশের ইনদওর শহরের ভওয়রাসলা স্কোয়্যার থেকে ‘উদ্ধার’ করেছে পুলিশ। ইনদওর-উজ্জয়িনী রোডের এই মোড়টি লব-কুশ স্কোয়্যার নামে বেশি পরিচিত। জেলাশাসক আশিস সিংহের নির্দেশে শহর জুড়ে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। সেই অভিযানেই এই মহিলা ও তার কন্যাকে ‘উদ্ধার’ করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর হলো, মহিলা নিজে থেকেই পুলিশকে জানিয়েছেন যে, গত ৪৫ দিন ধরে এই এলাকায় ভিক্ষা করে আসছেন তিনি। এই ৪৫ দিনে ভিক্ষা করে তিনি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আয় করেছেন। যারমধ্যে ১ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন বাড়িতে। রাজস্থানে যে বাড়িতে তার আরও দুই সন্তান মানুষ হচ্ছে তাদের ঠাকুরদা ও ঠাকুমার কাছে। বাকি দেড় লক্ষ টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজ়িট করেছেন। আর ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন ব্যক্তিগত কারণে। যদিও কোন খাতে সেই খরচ করেছেন, তা তিনি পুলিশকে জানাননি।
পুলিশ জানিয়েছে যে, বুধবার যখন পুলিশ ওই মহিলাকে ‘উদ্ধার’ করে তখন ওই মহিলার কাছে ছিল ১৯ হাজার ২০০ টাকা। পুলিশকে মহিলা জানিয়েছেন যে, ওই টাকা তিনি উপার্জন করেছেন গত ৭ দিনের মধ্যে। এছাড়াও তার ৮ বছরের কন্যাও গত বুধবার সকাল হতে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত উপার্জন করেছে ৬০০ টাকা।
পুলিশ জানিয়েছে যে, উজ্জয়িনী শহরেই এই মহিলা তার স্বামী ও তিন সন্তানকে নিয়েই ভিক্ষা করেন। যারমধ্যে শুধু মহিলার উপার্জনই হলো মাসে দেড় থেকে পৌনে দু’লক্ষ টাকা। হিসাব করে দেখা গিয়েছে যে, ওই মহিলার বার্ষিক আয় ২০ লক্ষ টাকা। (পরিসংখ্যান বলছে দেশটির মোট করদাতাদের মাত্র ১.৩ শতাংশ বছরে ২০ লক্ষ টাকা কিংবা তার বেশি উপার্জন করেন) যা যে কোনও কর্পোরেট চাকরির বেতনের চেয়েও বেশি। পুলিশ জানতে পেরেছে যে, বিভিন্ন শহরে এই পরিবারটির জমি, বাড়ি, গাড়িও নাকি রয়েছে। রয়েছে অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র এমনকি, স্মার্টফোনও!
পুলিশ জানিয়েছে যে, ৮ বছরের ওই শিশুকন্যাকে শিশুদের হোমে পাঠানো হয়েছে। আর ওই মহিলার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org