দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের আইটি শক্তিকে ভবিষ্যত বিনির্মাণের শপথে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন করলো।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার গ্রীনভিল আউটডোরস, মাদানি এভিনিউ এ প্রযুক্তির পথে বাংলাদেশের স্বপ্ন এবং সাফল্যের পথিকৃৎ হিসেব সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা থেকে বর্তমান সভাপতিদের সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে দেশের আইটি সেক্টরকে আরও বহুগুণ উপরে নিতে এর সদস্যরা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
বেসিসের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেমন আপনাদের প্রত্যাশা রয়েছে, তেমনি বেসিস এর কাছে আমাদের প্রত্যাশা হলো আগামী ৫ বছরে আপনারা যেনো ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করতে পারেন। আজ আইটি ও আইটিইএস খাত হতে ৩ লক্ষ তরুণের কর্মসংস্থান হয়েছে সেটি আমরা ১০ লাখে উন্নীত করতে চাই।
বেসিসের ২ হাজার ৪০০ সদস্য আইসিটি খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করতে সক্ষম হবে প্রত্যাশা করে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে, অবশ্যই আমরা ২০২৪ হতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত আইটি এবং আইটিইএস খাত যেনো কর্পোরেট করমুক্ত থাকে সে জন্যই আপনাদের সঙ্গে মিলে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো। তিনি বলেন, একই সঙ্গে একই সময়ের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে চাই।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আইসিটি, টেলিকম ও বেসিস, আমরা কেওই আলাদা কোন পক্ষ নই; আমরা সবাই বন্ধু এবং সহযোদ্ধার মতোই একটা টিম হয়ে গত ১৫ বছর কাজ করছি। আমাদের সফটওয়্যার শিল্প এবং উদ্যোক্তা সংস্কৃতির বিকাশে সরকার পক্ষ হতে যে সকল নীতিগত সহযোগিতা দেওয়া হয়েছিলো তা আগামীতেও অব্যাহত রাখবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বেসিসের ২ হাজার ৪০০ আইটি সার্ভিস প্রোভাইডার এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানে কয়েক লক্ষ তরুণের কর্মসংস্থান তৈরি ও আইসিটি খাতে ১.৯ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়েও নেতৃত্ব দিচ্ছে এই বেসিস। আমাদের আরও বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার সময়।
উক্ত অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপালা বিরাক্কডি, মার্কিন দূতাবাস প্রতিনিধি, কোটরা প্রতিনিধি, অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশন প্রতিনিধি এবং সহস্রাধিক বেসিস সদস্যসহ সতীর্থ বাণিজ্যিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অতীতের শক্তিতে ভবিষ্যত বিনির্মাণের শপথে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন করলো। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার গ্রীনভিল আউটডোরস, মাদানি এভিনিউ এ প্রযুক্তির পথে বাংলাদেশের স্বপ্ন এবং সাফল্যের পথিকৃৎ হিসেব সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা থেকে বর্তমান সভাপতিদের সম্মাননা জানানো হয়।
উদযাপনের আনন্দ ভাগাভাগি করার কথা উল্লেখ করে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, আমরা সকলের সঙ্গে এই উদযাপনের আনন্দ ভাগ করে নিতে চাই। বেসিসের এই মাইলফলক ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার দীর্ঘ এবং অবিচল যাত্রার প্রতিফলন, উদ্ভাবন, সৃজনশীলতা ও সাহসিকতার গল্প। বেসিস তার সদস্যদের ক্ষমতায়নে ও বিশ্বমানের সফটওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা সরবরাহে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছে।
রাসেল টি আহমেদ আরও বেলন, আমরা গর্বিত যে, আমাদের সংগঠন স্থানীয় সফটওয়্যার এবং আইটি পরিষেবাগুলোর মানোন্নয়ন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ ও ডিজিটাল উন্নয়নের প্রচার এবং প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছে। যে কারণে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। এই ক্ষেত্রে আইসিটি হলো স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশনের নিউক্লিয়াস। কৃষি খাত, উৎপাদন খাত, ব্যবসা থেকে শুরু করে শিক্ষা, এই সকল সেক্টরকে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট হওয়ার জন্য সফটওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবার পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
২৫ বছর পূর্তির ওই জমকালো অনুষ্ঠানে গান-নৃত্যে ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে বেসিস প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ তৌহিদ, সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম, এ কে এম ফাহিম মাশরুর, শামীম আহসান এবং মোস্তাফা জব্বারের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সম্মননায় ভূষিত হন বেসিস সাবেক সভাপতি এসএম কামাল, রফিকুল ইসলাম রাউলি, মাহবুব জামান এবং সৈয়দ আলমাস কবির।
সম্মানিত অতিথিদের উপস্থিতিতেই বাঁশ, বাটি-চামচ দিয়ে দারুণ যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। যন্ত্রীদের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক নিজেও।
উল্লেখ্য, দেশে গতিশীল সফটওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৮টি চার্টার সদস্য প্রতিষ্ঠান নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বেসিস-এর যাত্রা শুরু হয়েছিলো। বর্তমানে বেসিস এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৪০০।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org