দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডের বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনায় দ্বগ্ধ চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরাও শঙ্কামুক্ত নন বলে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. সামন্ত লাল সেন।
আজ শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক বিফ্রিং তিনি এই তথ্য দিয়েছেন।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ‘কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট’ ভবনটিতে আগুন লাগে। বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি সাততলা ভবন। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামে রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
আগুনে মারা যাওয়াদের মধ্যে ২৩ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। আজ শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ হস্তান্তর করা হচ্ছে মরদেহ।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়া জেনারেল মঈন উদ্দিন প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে চুলা কিংবা গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে বলে ধারণা করার কথা বলেছেন। ভবনটির প্রতিটি ফ্লোরে গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাত আড়াইটার পর সেখানে দায়িত্বপালনরত র্যাব-৩ এর এএসপি কামরুল হাসান প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, স্যামসাং শোরুমের পাশের কফি হাউস থেকে প্রথম আগুনের সূত্রপাত ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা আগুন নিচ থেকে উপরের দিকে উঠতে দেখেছেন। প্রথমে দোতলায় এরপর তা পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। নিচ থেকে আগুন উপরের দিকে ছড়াতে শুরু করলে ভবনের বিভিন্ন তলায় থাকা মানুষের বের হওয়া এক প্রকার কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও পরে ফায়ার সার্ভিস তাদের ল্যাডারের মাধ্যমে বেশ কিছু মানুষকে উদ্ধার করেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org