দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের লিখিত ইতিহাস শুরু হওয়ার পর হতে এই পর্যন্ত যতো ফেব্রুয়ারি মাস এসেছে, সেই সবের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম ফেব্রুয়ারি ছিল এ বছরের ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস অব কোপার্নিকাস (সিসিএসসি) ৭ মার্চ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এই তথ্য দিয়েছে।
মূলত বাতাসের যে স্তরটি ভূপৃষ্ঠের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে, সেটির নাম ট্রোপোপোস্ফিয়ার কিংবা ট্রোপোমণ্ডল। ভূপৃষ্ঠ হতে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঁচু এই স্তরটি।
সিসিএসসির বিবৃতিতে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে মাসজুড়েই বাতাসের ট্রোপোমণ্ডল স্তরের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৫৪ সেলসিয়াস। ইতিপূর্বে কোনো ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রপোমন্ডলে এই পরিমাণ তাপমাত্রা দেখা গেছে- এমন রেকর্ড কিন্তু নেই।
সিসিএসসি আরও জানিয়েছে, ১৯৯১ সাল হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই ট্রপোমণ্ডলের তাপমাত্রা একটু একটু করে বেড়েছে ও ৩০ বছরে তাপমাত্রা মোট বৃদ্ধি পেয়েছে দশমিক ৮১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস অব কোপার্নিকাসের রেকর্ড অনুসারে দেখা যায়, ইতিপূর্বে সবচেয়ে উষ্ণ ফেব্রুয়ারি মাস দেখা যায় ২০১৬ সালে। তবে ওই বছর ট্রপোমণ্ডলে যে গড়তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, এ বছরের ফেব্রুয়ারির তাপমাত্রা তার চেয়ে দশমিক ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
ইউরোপপীয় ইউনিয়নের জলবায়ুবিদরা জানিয়েছেন যে, ফেব্রুয়ারির আগে টানা ৮ মাস ধরে রেকর্ড উষ্ণতা দেখেছে পুরো বিশ্ব। ফেব্রুয়ারির মধ্যেদিয়ে তা উন্নীত হয়েছে ৯ মাসে।
ইউরোপের পাশাপাশি সাইবেরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় এবং উত্তরপশ্চিমাঞ্চল, দক্ষিণ আমেরিকার অধিকাংশ দেশ, আফ্রিকা ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার লোকজনও রেকর্ড পরিমাণ উষ্ণতা অনুভব করেছেন এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে।
আবার ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সাগরপৃষ্ঠের উষ্ণতাও। গত ফেব্রুয়ারি সমুদ্রগুলোর ট্রপোমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা ছিলো ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ইতিপূর্বে কোনো মাসে সমুদ্রে এতো তাপমাত্রা দেখাই যায়নি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org