দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তিনি এক সময় ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বিত্তশালী ব্যবসায়ী। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তিনি পরে সর্বস্বান্ত হয়ে যান। ৭ হাজার কোটি ডলার খুইয়ে ফেলেন মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই। এখন রীতিমতো তিনি দেউলিয়া!
এই ব্যক্তি হলেন জাপানের ব্যবসায়ী মাসায়োশি সোনের। ব্যবসায়ী হিসাবে সব থেকে বেশি সম্পত্তি খোয়ানোর নজিরও রয়েছে তার। বিশ্বের ইতিহাসে তাকেই ‘সবথেকে দুর্ভাগা’ ব্যবসায়ী মনে করেন অনেকেই!
মাসায়োশি কোরীয় বংশোদ্ভূত জাপানি ব্যবসায়ী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা। বিনিয়োগকারী সংস্থা ‘সফ্টব্যাঙ্ক’ গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। গোষ্ঠীর সিইও ও চেয়ারম্যানের পদেও তিনিই রয়েছেন। ব্রিটেনেও একটি বিনিয়োগ সংস্থা রয়েছে এই ব্যবসায়ীর। বিনিয়োগকারী হিসাবেও যথেষ্ট পরিমাণ পরিচিতি রয়েছে মাসায়োশির। একাধিক স্টার্ট আপ সংস্থায় তিনি বিনিয়োগ করেছেন, যেগুলো পরবর্তীকালে সফলও হয়েছে। ‘ইয়াহু’ ও ‘আলিবাবা’র মতো বড় সংস্থাগুলোতেও তিনি বিনিয়োগ করেছিলেন।
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, মাসায়োশির মোট সম্পত্তির পরিমাণ হলো প্রায় ৩ হাজার ৯০ কোটি ডলার। বর্তমানে তিনি জাপানের দ্বিতীয় বিত্তশালী ব্যক্তি। তবে বর্তমানে মাসায়োশির যে সম্পত্তি রয়েছে, তার চেয়েও অনেক বেশি পরিমাণ সম্পদ তিনি খুইয়েছেন।
২০০০ সালের ঘটনা, তখন ‘ডট কম’ ধসে প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার খোয়ান মাসায়োশি, যা বিশ্বের ইতিহাসে সর্বোচ্চ লোকসানের ঘটনা হিসেবে দেখা হয়।
১৯৮১ সালে বিনিয়োগকারী সংস্থা ‘সফ্টব্যাঙ্ক’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মাসায়োশি। সেই থেকেই তার উত্থান শুরু। নব্বইয়ের দশকে উন্নতির শীর্ষে পৌঁছে যায় তার সংস্থাটি। ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে আয়। কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে বিত্তশালী ব্যক্তির তকমা পেয়ে যান মাসায়োশি।
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, এক সময় প্রতিদিন হাজার কোটি ডলার করে আয় করতো মাসায়োশির সংস্থা। বলা হয় যে, মাসায়োশির কাছে যা সম্পত্তি ছিল, তাতে করে তিনি প্রতি ঘণ্টায় ৪১টি অডি গাড়ি কিনতে পারতেন। দিল্লির বিলাসবহুল এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ৪০০ কোটি টাকা মূল্যের ২৩টি বাংলোও কিনতে পারতেন। তবে খুব বেশিদিন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তকমা ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
জানা যায়, ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে শেয়ার বাজারে ‘ডট কম’ বিপর্যয়ের কারণে বিভিন্ন সংস্থা ক্ষতির মুখে পড়ে যায়। আর সেই তালিকায় ছিল সফ্টব্যাঙ্কও। গোষ্ঠীটির বাজারদর দু’মাসে ৭৫ শতাংশ কমে যায়।
জানা যায়, ২০০০ সালের শেষ নাগাদ এসে মোট সম্পত্তির ৯৩ শতাংশ খোয়ান তিনি। প্রায় দেউলিয়া হয়ে যায় তার সফ্টব্যাঙ্ক। হিসাব কষে দেখা যায় যে, কয়েক মাসে মোট ৭ হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে।
যদিও সেখান থেকে আবার ঘুরে দাঁড়ায় সফ্টব্যাঙ্ক। ঘুরে দাঁড় করান মাসায়োশি নিজেই। নতুন নতুন সংস্থায় বিনিয়োগ শুরু করে দেন তিনি। মাসায়োশি বর্তমানে কৃত্রিম মেধা ও রোবোটিক্সের বিভিন্ন সংস্থাতেও বিনিয়োগ করতে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তিনি বহু সম্পত্তির মালিক হলেও পুরোনো প্রতিপত্তি ফিরে পাননি।
উল্লেখ্য যে, মাত্র কয়েক বছর আগেও ভারতেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারকে উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন মাসায়োশি!
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org